Vyr") বৈকুণ্ঠের উইল গাড়ী হাঁকাইতে আদেশ করিল। গাড়ী ছাড়িয়া দিতেই গোকুল অকস্মাৎ রুদ্ধকণ্ঠে বলিয়া উঠিল, ফেলে চলে গেলে মা, আমি কি তোমার ছেলে নাই ? আমাকে কি তোমার মানুষ করতে হয়নি ? গাড়ীর চাকার শব্দে সে কথা ভবানীর কানে গেল না, কিন্তু বিনোদের কানে গেল। সে মুখ বাড়াইয়া দেখিল, গোকুল কেঁচার খুটে মুখ ঢাকিয়া দ্রুতপদে প্ৰস্থান করিল।” এবং ভিতরে ঢুকিয়া সে বিনোদের বসিবার ঘরে গিয়া দোর দিয়া শুইয়া পড়িল। তাহার এই ব্যবহার অলক্ষ্যে থাকিয়া লক্ষ্য করিয়া নিমাই কিছু উদ্বিগ্ন হইতেছিলেন ; কিন্তু খানিক পরে সে যখন দ্বার খুলিয়া বাহির হইল এবং যথাসময়ে স্নানাহার করিয়া দোকানে চলিয়া গেল, তখন তাহার চোখে মুখে এবং আচরণে বিশেষ কোন ভয়ের চিকু না দেখিয়া তিনি হাফ ছাড়িয়া বঁচিলেন । এবং নির্বিবন্ধু হইয়া তিনি এইবার নিজের কাজে মন দিলেন। অর্থাৎ সাপ যেমন করিয়া তাহার শিকার ধীরে ধীরে উদারস্থ করে, ঠিক তেমনি করিয়া তিনি জামাতাকে মহা আনন্দে জীৰ্ণ করিয়া ফেলিবার আয়োজন করিতে লাগিলেন । লক্ষণও বেশ অনুকুল বলিয়াই মনে হইল। গোকুল পিতার মৃত্যুর পর হইতেই অত্যন্ত উগ্র এবং অসহিষ্ণু হইয়া উঠিয়াছিল, সামান্য কারণেই বিদ্রোহ কারিত ; কিন্তু যে দিন ভবানী চলিয়া গেলেন, সেই দিন হইতে সে যেন আলাদা মানুষ হইয়া গেল । কাহারও কোন কথায় রাগও করিত না, প্ৰতিবাদ করিত না । Vé
পাতা:বৈকুন্ঠের উইল - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৮৫
অবয়ব