পাতা:বৈজ্ঞানিক সৃষ্টিতত্ত্ব - অক্ষয়কুমার চট্টোপাধ্যায়.pdf/১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বৈজ্ঞানিক সৃষ্টিতত্ত্ব


দুই বিভিন্ন প্রকার বৈদ্যুতিক শক্তি কখনও মিলিত বা বিচ্ছিন্ন হয় না। যখন কোন জড়শক্তি (Physical force) উহাদের বল পূর্ব্বক বিচ্ছিন্ন করিতে চেষ্টা করে, তখন ঐ পরমাণু অন্য এক প্রকার পরমাণুতে পরিবর্ত্তিত হয়। এইরূপে দুই বিভিন্ন বৈদ্যুতিক শক্তির পরিমাণ ও একত্র সমাবেশ, গতি ও স্পন্দনের নানা রূপ ব্যবস্থাতে বিভিন্ন প্রকার পরমাণু (atom) সকলের উৎপত্তি হইয়াছে। প্রকৃতির সৃষ্টি-কৌশলের মধ্যে সৰ্ব্বাপেক্ষা আশ্চর্য এই যে, দুইটী সম্পূর্ণ বিপরীত ধৰ্ম্মবিশিষ্ট বৈদ্যুতিক শক্তি (Positive and negative), যাহার একের সহিত অন্যের সংঘর্ষ হইলে মুহূর্তে পরমাণু বা এটম সকলের ধ্বংস প্রাপ্তির সম্ভাবনা অথচ তাহারা এরূপভাবে একত্র পরমাণু বা এটমের মধ্যে বসবাস করিতেছে যে, সহসা তাহাদের মধ্যে কলহ বাধে না। যদি তাহাদের গতি বা স্পন্দনের সামান্য মাত্র বিপর্যয় ঘটে, অমনি প্রলয় উপস্থিত হইবে ও তাহারা বিশ্লিষ্ট হইয়া অপর পরমাণু (atom) রূপে আবির্ভূত হইবে।
এইরূপ কয়েকটা পরমাণু (atom) একত্র মিলিয়া যখন ঘনীভূত হয়, তখন উহাদের ঐ অবস্থাকে অণু বা মলিকিউল (molecule) বলা হয়। অণু (molecule) সকল পৃথিবীস্থ জল, বায়ু, মৃত্তিকা প্রভৃতি জড় পদার্থের স্ব স্ব গুণবিশিষ্ট সূক্ষ্ম অংশ মাত্র। ইহাদেরই ঘনীভূত অবস্থার তারতম্যানুসারে জড় পদার্থ সকল বাষ্পীয়, তরল ও কঠিন আকার ধারণ করে।
শূন্যময় আকাশে এই জড় পদার্থ সকল প্রথমে উত্তপ্ত বাষ্পীয় অবস্থায় বর্তমান থাকিয়া তেজ ও আলােকরশ্মি বিকীরণ করিতে থাকে। ক্রমশঃ উহাদের তেজ হ্রাস হইয়া তরল ও পরে কঠিন পদার্থে পরিণত হইয়া এই জগতের সৃষ্টি হইয়াছে। জগতের এই ক্রমবিকাশের পূর্বাবস্থাকে নীহারিকাময় (nebulous) অবস্থা বলা হয়। এই নীহারিকা বা নেবুলা