পাতা:বৈজ্ঞানিক সৃষ্টিতত্ত্ব - অক্ষয়কুমার চট্টোপাধ্যায়.pdf/১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বৈজ্ঞানিক সৃষ্টিতত্ত্ব ৯

এইরূপ ঘটনা ঘটিয়াছিল, তখন পৃথিবীর উপরিভাগে মৃত্তিকা, জল ও বায়ুর উৎপত্তি হইয়া উহা জীবােৎপাদনের উপযােগী হইয়াছিল। সেই সময়ে জল ও উত্তাপের সাহায্যে কোন কোন নির্জীব পদার্থের মিশ্রণে রাসায়নিক ক্রিয়া প্রকাশিত হইয়া লালার ন্যায় এক প্রকার পদার্থ উৎপন্ন হইয়াছিল। উহাতেই সর্বপ্রথম জৈবিক ক্রিয়া প্রকাশিত হয়। কোন কোন বৈজ্ঞানিক পণ্ডিত বলেন যে সায়ানােজন (cyanogen) নামক যৌগিক পদার্থের মিশ্রণে যে সকল মিশ্র পদার্থ উৎপন্ন হয় তাহাদের সহিত সজীব পদার্থ সকলের অতিনিকট সৌসাদৃশ্য দেখা যায়। প্রচণ্ড উত্তাপ প্রয়ােগ ভিন্ন সায়ানােজেনের উৎপত্তি হইতে পারে না সুতরাং জৈবিক পদার্থ সকল পৃথিবীর আলােকময় উত্তপ্ত অবস্থাতেই উৎপন্ন হইয়া ছিল এরূপ অনুমান করা তাহারা যুক্তি সঙ্গত বলিয়া মনে করেন। এই লালার ন্যায় পদার্থ হইতেই সেল্ (cell) বা জীবকোষের উৎপত্তি হইয়াছে। এই cell বা জীবকোষই পরে জীবাণুরূপে পরিণত হইয়া থাকে। সেলের (cell) অভ্যন্তরস্থ পদার্থকে প্রােটোপ্লাজম (Protoplasm) বলা হয়। এই অতি সুক্ষ্ম লালাবৎ পদার্থ (Colloid form) অন্যান্য পদার্থ হইতে আহার সংগ্রহ করিয়া কিয়ৎ পরিমাণে পুষ্ট হইলে তাহা আপনা আপনি দ্বিখণ্ডিত হইয়া দুইটি সেলের উৎপত্তি হয়। তাহারা আবার ঐরূপে বৃদ্ধি পাইয়া দ্বিখণ্ডিত হইয়া ক্রমশঃ অসংখ্য সেলের উৎপত্তি করে। এই সেল হইতেই সামান্য বেঙের ছাতা (fungus) হইতে বৃক্ষাদি উদ্ভিদ সকলের ও সামান্য কীটাণু হইতে মনুষ, পশু, পক্ষী, পতঙ্গাদি জীব সকলের দেহ নির্মিত হইয়াছে।
এইবার আমি পূর্বোক্ত সূক্ষ্ম ও লালাবৎ পদার্থ হইতে জীব ও উদ্ভিদ শরীরের প্রধান উপাদান জীবকোষ বা সেল (cell) নামক পদার্থের উৎপত্তির বিষয় বলিব। প্রত্যেক জীবদেহে এক বা ততােধিক সেল বহু