বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:বৌদ্ধগান ও দোহা.djvu/১৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

১৷৷৴৹

নানা তরুবর মৌলিল রে গঅণত লাগেলী ডালী।
একেলী সবরী এ বণ হিণ্ডই কর্ণকুণ্ডলবজ্রধারী॥ ধ্রু॥
তিঅ ধাউ খাট পাড়িলা সবরো মহাসুহে সেজি ছাইলী।
সবরো ভুজঙ্গ নৈরামণি দারী পেহ্ম রাতি পোহাইলী॥ ধ্রু॥
হিঅ তাঁবোলা মহাসুহে কাপুর খাই।
সুন নৈরামণি কণ্ঠে লইআ মহাসুহে রাতি পোহাই॥ ধ্রু॥
গুরুবাক পুঞ্চআ বিন্ধ ণিঅমণ বাণেঁ।
একে শরসন্ধানেঁ বিন্ধহ বিন্ধহ পরমণিবাণেঁ॥ ধ্রু॥
উমত সবরো গরুআ রোষে।
গিরিবরসিহরসন্ধি পইসন্তে সবরো লোড়িব কইসে॥ ধ্রু॥

 উচ্চ [হইতে] উচ্চ পর্ব্বত (সুমেরুশিখরাগ্র), সেইখানে (চহাসুখচক্রে) বালিকা শবরী (বজ্রধর শবরের গৃহিণী, জ্ঞানমুদ্রা নৈরাত্মা) বাস করেন। শবরীর পরিধান (নানাবিধ ভাববিকল্পরূপ) ময়ূরপুচ্ছ, গ্রীবাতে (সম্ভোগচক্রে, গুহ্যমন্ত্ররূপ) গুঞ্জামালা। (তিনি শবরকে বলিতেছেন—ওহে) উন্মত্ত (বিষয়বিহ্বলচিত্ত) শবর! (সুতরাং ওহে) পাগল শবর! [আমাকে তুমি, মেরু]-গুহায় লীন করিও না [আমাকে মেরুগুহায় লীন করিয়া রাখিয়া, তুমি বিকল্পের দিকে যাইও না]। সহজসুন্দরী নামে আমি তোমার নিজ গৃহিণী, তোমারই [মেরুপর্ব্বত]-গুহায় বিচরণ করিতেছি। (ঐ দেখ, বিকল্পের দিকে] (অবিদ্যারূপ) প্রধান তরু নানাপ্রকারে মুকুলিত হইল, (পঞ্চস্কন্ধরূপ তাহার) ডালসকল (প্রভাস্বর) গগনেতে লাগিল (অর্থাৎ গগন আবৃত করিল)। [কিন্তু এ দিকে] (নৈরাত্মা) শবরী কর্ণে (নানা স্থানে, পঞ্চমুদ্রারূপ নিরংশুকালঙ্কার) কুণ্ডল [কুণ্ডলীকৃত, নানা শক্তির একীকৃত আকৃতি এবং] বজ্র (সহজস্বরূপপ্রাপ্তির উপায়রূপ জ্ঞান) ধারণ করিয়া এই (শরীররূপ) বনে একাকিনী ক্রীড়া করিতেছেন। [এই কথা শুনিয়া] শবর তিন ধাতুকে (কায়-বাক্-চিত্তকে, প্রভাস্বর-সুখরূপ) খাট করিয়া পাতিলেন এবং সেই মহাসুখরূপ খাটে শয্যা বিছাইলেন। ভুজঙ্গ[ধারী][ব্যাখ্যা ১] শবর [সেই শয্যায়] দারী (ক্লেশবিদারণকারিণী নিজগৃহিণী) নৈরাত্মার সহিত (অনুপম) প্রেমলীলারসে রাত্রি পোহাইলেন (অন্ধকাররূপ বিকল্প নাশ করিলেন)। [সেই প্রেমলীলায় তাঁহারা] হৃদয়কে তাম্বূল করিয়া (ভোগসম্বন্ধ হইতে মুক্ত করিয়া), মহাসুখকে (যুগনদ্ধ রূপকে, ফলহেতুসম্বন্ধ হইতে মুক্ত করিয়া) কর্পূররূপে ভক্ষণ করিলেন। এবং শূন্য নিরামণিকে কণ্ঠে (সম্ভোগচক্রে) লইয়া মহাসুখে (মহাসুখরূপ জ্ঞানরশ্মির দ্বারা) রাত্রি পোহাইলেন (স্বকায়ক্লেশরূপ তমঃ


  1. ভুজঙ্গ অর্থ শক্তি। সাধনাপ্রভাবে শক্তির উপর যিনি আধিপত্য লাভ করেন, তিনি ভুজঙ্গধারিরূপে বর্ণিত হন।