পাতা:বৌদ্ধধর্ম - হরপ্রসাদ শাস্ত্রী.pdf/১২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
দলাদলি

ধর্ম্ম হইলেই দলাদলি হয়। সভা হইলেই দলাদলি হয়। পাঁচজনে মিলিয়া কাজ করিতে গেলে মতান্তর হয়ই হয়, আর মতান্তর হইলেই দলাদলি হয়। দলাদলিটা দোষের কথাও বটে, দোষের কথা নয়ও বটে । দলাদলিতে যখন মূল কাজ পণ্ড হয়, তখন দোষের। যখন মূল কাজের শ্ৰীবৃদ্ধি হয়, তখন গুণের। যখন দলাদলির মীমাংসা করিয়া দিবার লোক থাকে, তখন দলাদলিতে উপকার হয়। যখন মিটাইয়া দিবার লোক থাকে না, তখন উহাতে অপকার হয় । বৌদ্ধ-ধৰ্ম্মে যে দলাদলি হইয়াছিল তাহাতে ধৰ্ম্মের উন্নতিই হইয়াছিল ; দুই দলই ধৰ্ম্মপ্রচারের জন্য কোমর বঁধিয়া পৃথিবীর চারিদিকেই ঘুরিয়াছিলেন। একদল উত্তরে, একদল দক্ষিণে । তাঁহারা যে সব দেশে গিয়াছিলেন, তাহার অনেক দেশ এখনও বৌদ্ধ আছে। সুতরাং এতবড় একটা বড় দলাদলির ইতিহাসটা কিছু জানা চাই।
প্রথম কথা কি লইয়া দলাদলি হয় ? অতি তুচ্ছ কথা । যাহা লইয়া দলাদলি হয়, পালিতে তাহাকে দশবত্থু বলে, সংস্কৃতে দশবস্তু। অর্থাৎ দশটি জিনিস লইয়া দলাদলির সুত্রপাত। যথা:–
( ১ ) কল্পতি, সিঙ্গিলোণ কপ্পো :- অনেক ভিক্ষু শিংয়ের পাত্রে একটু লুণ সঞ্চয় করিয়া রাখিতেন। তঁহার তো ভিক্ষা করিয়া খাইতেন ? সব সময়ে তো লুণ দেওয়া ব্যঞ্জন পাইতেন না। আবার সেকালে সকলে সকলের লুণ খাইতেন না। লুণ না দিয়া ব্যঞ্জন রান্না হইত। তাই পরিবেশনও হইত। লোকে লুণ মিশাইয়া খাইত। এখনও অনেক খাঁটি হিন্দুর বাড়ীতে আলুণী ছক্কার ব্যবহার দেখিতে পাওয়া যায়। তাহারা বোধ হয় মনে করেন লুণ দিলেই “এটোঁ” হয়। তাই পরিবেশনের সময় আলুণীই পরিবেশন করেন। পাতে লুণ থাকে, সেই লুণ মিশাইয়া লোকে “এঁটো” করিয়া খায়। এইরূপ ব্যবহার বোধ হয় সেকালেও ছিল। * লোকে ভিক্ষুদের রান্না জিনিস দিত, আলুণীই দিত। ভিক্ষুরা একটু লুণ