পাতা:বৌদ্ধধর্ম - হরপ্রসাদ শাস্ত্রী.pdf/৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

R8 বৌদ্ধ ধৰ্ম্ম সত্ত্বে বা করুণায় অভিভূত হইয়া পড়িতেন, তখন র্তাহারা জীবের উদ্ধারের জন্য পুনঃ পুনঃ জন্মগ্রহণ করিতেও কুষ্ঠিত হইতেন না। বুদ্ধদেব যে পঞ্চশীল দিয়া গিয়াছেন, তাহা ভাঙ্গিতেও কুষ্ঠিত হইতেন না। আৰ্য্যদেবী ‘চিত্তবিশুদ্ধিপ্ৰকারণে” বিলিয়া গিয়াছেন “যে জগৎ উদ্ধারের জন্য কোমর বঁাধিয়াছে, তাহার যদি কোন দোষ হয়, সে দোষ একেবারে ধৰ্ত্তব্যই নয়।” এই বৌদ্ধধৰ্ম্মের চরম উন্নতি। মহাযানের দর্শন ' ঘেমন গভীর, ' ধৰ্ম্মমত যেমন বিশুদ্ধ, করুণ। যেমন প্রবল, এমন আর কোন ধৰ্ম্মে দেখা যায় না। বুদ্ধদেবের সময় হইতে প্ৰায় হাজার বৎসর অনেক লোকে অনেক তপস্যা ও সাধনা করিয়া এইমতের সৃষ্টি করিয়াছিলেন । ভারতবর্ষে তখন বড় বড় রাজ্য ছিল, নানারূপ ধনগমের পথ ছিল, কৃষিবাণিজ্য ও শিল্পের যথেষ্ট বিস্তার হইতেছিল, বিদ্যার যথেষ্ট আদর ছিল । তাই এত লোকে এতশত বৎসর ধরিয়া একই বিষয়ে চিন্তা করিয়া এতদূর উন্নতি করিতে পারিয়াছিলেন। চাণক্য শ্লোকে বলে ‘ধন উপায় করা বড় সহজ, কিন্তু ধন রাখা বড় কঠিন।” জ্ঞানেরও তাই, জ্ঞান উপাৰ্জন সহজ, কিন্তু জ্ঞানটি রক্ষা করা বড় কঠিন। মহাযানেরও এই জ্ঞান বেশীদিন রক্ষা হয় নাই। দেশ । ক্ৰমে ছোট ছোট রাজ্যে ভাগ হইয়া গেল, সঙ্গে সঙ্গে বাণিজ্য লোপ হইয়া আসিল, লোকেও দেখিল যে বহুকাল চিন্তা করিয়া বহুকাল যোগসাধনা করিয়া মহাযান হৃদয়ঙ্গম করা অসম্ভব, সুতরাং একটা সহজ মত বাহির করিতে হইবে। বৌদ্ধ ভিক্ষুরা রাজার দত্ত বৃত্তিতে বঞ্চিত হইয়া যজমানদিগে বা উপর নির্ভর করিতে লাগিন্তোন ; তঁহাদের আর চিন্তা করিবার সময়ও রহিল না, সে স্বাধীনতাও রহিল না । কিন্তু নির্বাণের কথা বলিতে গিয়া আমরা অনেক বাহিরের কথা বলিয়া ফেলিলাম। বোধ হয় এগুলি না বলিলে হইত না । মহাযানের নিৰ্বাণ শূন্যতা” ও “করুণায় মিশামিশি। এ নির্বাণের একদিকে "করুণা’, আর একদিকে 'শূন্যতা’, করুণা সকলেই বুঝিতে পারে। কিন্তু যে সকল যজমানের উপর বৌদ্ধ ভিক্ষুরা বেশী নির্ভর করিতে লাগিলেন,