বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:বৌদ্ধ-ভারত.djvu/৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সপ্তম অধ্যায়
৬৭

উন্নতিলাভ করিয়াছিলেন তদ্বিষয়ে কোন সন্দেহ নাই। কেবল চন্দ্র সূর্য্য নহে, গ্রহ-নক্ষত্রাদির গতিবিধি পর্য্যবেক্ষণ করিয়া তাঁহারা তদনুসারে তাঁহাদের লৌকিক ও ধর্ম্মপঞ্জিকা প্রণয়ন করিয়াছিলেন। ভারতীয় জ্যোতিষীরা চন্দ্রের গতিবিধি গণনায় অধিকতর সাফল্যলাভ করিয়াছিলেন। চন্দ্রের পৃথিবীপ্রদক্ষিণপথ অবলম্বন করিয়া তাঁহারা নক্ষত্রপুঞ্জকে সাতাশ ভাগে বিভক্ত করিয়াছিলেন। চন্দ্রের ভূ-প্রদক্ষিণপথ খৃষ্টপূর্ব্ব ১২০০ অব্দে মহাকাব্যযুগে নির্ণীত হইয়াছিল।”

 বেদে যেমন অগ্নি, জল, বায়ু, প্রভৃতি ভূতগণের বন্দনাগান আছে, সেইরূপ সূর্য্য চন্দ্র ও গ্রহ-নক্ষত্রাদির স্তবস্তুতি রহিয়াছে। লোকে গগনমণ্ডলের এই জ্যোতিষ্কদিগকে ধর্ম্মভাবে অভিভূত হইয়া পর্য্যবেক্ষণ করিত। সৌরজগতের বৃহত্তম গ্রহ বৃহস্পতি তদানীন্তন জ্যোতিষীদের বিশেষ পরিচিত ছিল। লৌকিক ও ধর্ম্মপঞ্জিকায় চন্দ্র সূর্য্যের মত বৃহস্পতির গতিবিধিরও উল্লেখ আছে।

 পৃথিবী যে পথে সূর্য্যকে প্রদক্ষিণ করিয়া থাকে আমরা সেই কক্ষপথে সূর্য্যকে ভ্রমণ করিতে দেখি। এই পথটিকে রাশিচক্র বলে। গ্রীক জ্যোতিষীদের অনুসরণে ভারতের জ্যোতিষীরা রাশিচক্রকে মেষ, বৃষ, মিথুন, কর্কট, সিংহ, কন্যা, তূলা, বিছা, ধনু, মকর, কুম্ভ, মীন এই বারো ভাগে বিভক্ত করিয়াছেন।

 ঐতিহাসিকগণ ভারতইতিহাসের যে যুগকে “পৌরাণিক” আখ্যা প্রদান করিতেছেন সেই যুগে বৌদ্ধধর্ম্মের ও বৌদ্ধসংঘের প্রভাব ক্রমশঃ ক্ষীণতর হইতেছিল, কিন্তু তখনও হিন্দু ও বৌদ্ধগণ পাশাপাশি মিত্রভাবে বাস করিতেছিলেন। বরাহমিহির পৌরাণিক যুগের জ্যোতিষী। তৎপ্রণীত বৃহৎসংহিতা গ্রন্থ ডাক্তার কারন্ সম্পাদন করিয়াছেন। বৃহৎসংহিতায় ব্রহ্মা, ইন্দ্র, যম, বরুণ প্রভৃতি দেবতাদের সহিত ভগবান্ বুদ্ধের নাম উল্লেখ করা হইয়াছে।

 পৌরাণিক যুগের প্রসিদ্ধ জ্যোতিষী আর্য্যভট্ট খৃষ্টীয় ৪৭৬ অব্দে জন্মগ্রহণ করিয়াছিলেন। তাঁহার প্রণীত গ্রহ গীতিকাপাদ, গণিতপাদ, কালক্রিয়াপাদ, গোলপাদ এই কয়েক খণ্ডে বিভক্ত। আর্য্যভট্ট