“তিনি আমাদের দিদিঠাকরুণের নামে জামাইয়ের কাছে কি সব লাগাইয়াছিলেন, তাই জামাই রাতারাতিই দিদিঠাকরুণকে ফেলিয়া চলিয়া গেছেন। দিদিঠাকরুণ ত কাঁদিয়া কাটিয়া অনাত্ত করিতেছেন। মহারাজা খাপা হইয়া উঠিয়াছেন, তিনি বৌঠাকরুণকে শ্রীপুরে বাপের বাড়ি পাঠাইতে চান। ঐ দেখ ভাই, তোমার সকল কথাতেই হাসি! ইহাতে হাসিবার কি পাইলে? তোমার যে আর হাসি ধরে না।”
রামচন্দ্র রায়ের পলায়ন বার্ত্তার যথার্থ কারণ, রাজবাটির প্রত্যেক দাস দাসী সঠিক অবগত ছিল, কিন্তু কাহারো সহিত কাহারো কথার ঐক্য ছিল না।
মঙ্গলা কহিল, “তোমাদের মাঠাকরুণকে বলিও যে, বৌঠাকরুণকে শীঘ্র বাপের বাড়ি পাঠাইয়া কাজ নাই। মঙ্গলা এমন ওষুধ দিতে পারে যাহাতে যুবরাজের মন তাঁহার উপর হইতে একেবারে চলিয়া যায়।” বলিয়া সে খল্ খল্ করিয়া হাসিতে লাগিল। মাতঙ্গ কহিল, “তা বেশ কথা!”
মঙ্গলা জিজ্ঞাসা করিল, “তোমাদের বৌঠাকরুণকে কি যুবরাজ বড় ভালবাসেন?”
“সে কথায় কাজ কি! এক দণ্ড না দেখিলে থাকিতে পারেন না! যুবরাজকে “তু” বলিয়া ডাকিলেই আসেন।”
“আচ্ছা, আমি ওষুধ দিব। দিনের বেলাও কি যুবরাজ তাহার কাছেই থাকেন?”
“হাঁ।”
মঙ্গলা কহিল “ওমা কি হইবে! তা’, সে যুবরাজকে কি বলে, কি করে, দেখিয়াছিস?”
“না ভাই, তাহা দেখি নাই।”
“আমাকে একবার রাজবাটীতে লইয়া যাইতে পারিস্, আমি তাহা হইলে একবার দেখিয়া আসি!”