পাতা:ব্যবসায়ী - মহেশচন্দ্র ভট্টাচার্য্য.pdf/৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বৈশ্যোচিত গুণ । Συ এই সকল অবস্থায় যাহারা টাকা ধার দেয়, তাহদের অনেকেই ভাল লোক নহে, ঋণ দানের অন্তরালে খাতকের বাড়ীঘর আত্মসাৎ করাই তাহাদের প্রধান উদ্দেশ্য থাকে। ইহারা অমিতব্যয়ের পরামর্শ ও প্রশ্রয় দিয়া প্ৰতিবাসীর সর্বনাশের চেষ্টা করে । “ঋণাং কৃত্ব •ঘুতং পিবেৎ” ঋণ করিয়া ঘি খায় এইরূপ লোক ও অনেক আছে এবং অন্যের দুঃখ দেখিলে এইরূপ কাতর হয় যে আপনার ভালমন্দ বিচার করিবার ক্ষমতা থাকে.না এমন উদারতাও দেখা গিয়া থাকে । লক্ষ্মীছাড়া হইলেও ব্যবসায় হয় না এবং উদার হইলেও ব্যবসায় হয় না । যে ব্যবসায়ে প্ৰথম প্ৰবেশ করিয়াছে তাহার পক্ষে উদারতা এবং সৰ্ব্বসময়েই ব্যবসায়ীর পক্ষে অমিতব্যয়ীতা ঘোরতর অনিষ্টজনক । যাহাকে জিনিষ কিনিয়া ও সেই জিনিষ বিক্রয় করিয়া তাহা হইতে দুই পয়সা লাভ ও তদ্বারা অর্থ সঞ্চয় করিতে হুইবে তাহার পক্ষে হিসাবী হওয়া কত প্ৰয়োজন তাহা সকলেই বুঝিতে পারেন। সুতরাং ব্যয় বিষয়ে সাবধান না হইলে ব্যবসায় চলিতে পারে না। যিনি অনেক মূলধন লইয়া বড় ব্যবসায় করিতে চাহেন তাহাকেও হিসাবী হইতে হইবে, কারণ হিসাবের উপরই লাভ, যাহাতে চারি পয়সা আসিতে পারে এইরূপ বুঝা যায় তাহাতে দুই পয়সা ব্যয় করা যাইতে পারে। কিন্তু ব্যবসায়ে অকারণ খোলা হাত দেখাইলে দুইদিনে সব উড়িয়া যায়। ফলতঃ যে সকল গুণ থাকিলে ব্যবসায়ী হওয়া যায়, মিতব্যক্ৰিয়তাই ইহাদের সর্বপ্রধান। মিতব্যক্ৰিয়তাবােৱ প্ৰভাৱিক । সংসারে অর্থাভাবে যত লোক কষ্ট পায়। তন্মধ্যে অধিকাংশেরই কারণ অমিতব্যক্ৰিয়তা । আমার বিশ্বাস বঙ্গদেশীয় কৃষকগণ মিতব্যয়ী হইলে তাহাদিগকে দুভিক্ষের যন্ত্রণায় কষ্ট পাইতে হইত না । খৃষ্টান এবং ব্ৰাহ্মগণ ধৰ্ম্ম প্রচারের জন্য বহু অর্থব্যয় করিয়া থাকেন, মিতব্যয়িতা প্রচারের জন্য তাহার কতক অর্থ ব্যয় করিলে বিশেষ উপকার হইত ।