পাতা:ব্রাহ্মধর্ম্মের মত ও বিশ্বাস - দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪২
ষষ্ঠ উপদেশ।

তবে তাহাতে কোন ফলই দর্শে না। যদি শর দেখিয়া আমাদের বৈরাগ্য উপস্থিত হয়—যদি বিপদে পড়িয়াই ঈশ্বরকে মনে হয়—তবে তাহাতে কি হইতে পারে? আমরা সকল সময়েতেই যে তাঁহার আশ্রিত এবং তিনি আমাদের একমাত্র আশ্রয়, এই ভাব নিরন্তর মনে রাখা কর্ত্তব্য। আমরা যেমন বন্ধুর সহিত এক প্রকার সম্বন্ধ নিবদ্ধ করি, সেই রূপ ঈশ্বরের সহিত সম্বন্ধ নিবদ্ধ না করিলে তাঁহাকে জানার কোন ফল নাই। আমরা জানিলাম, ঈশ্বর আমারদিগের পরম পিতা, আমরা সকলেই তাঁহার পুত্র। কিন্তু পুত্রের ন্যায় যদি তাঁহাকে ভক্তি না করি, পুত্রের ন্যায় তাঁহাতে নির্ভর না করি; তবে সে জ্ঞান থাকা না থাকা সমান। আমরা জানিলাম ঈশ্বর সর্ব্বজ্ঞ, সর্ব্বব্যাপী; কিন্তু অল্পজ্ঞ মনুষকে যে রূপ সাক্ষাৎ দেখি, তাঁহাকে যদি তদ্রুপ করিয়াও না দেখি; সামান্য লোকের অনুরোধে কোন অসৎ কর্ম্ম হইতে যেমন নিবৃত্ত হই, তাঁহার অনুরোধ ততটুকুও রক্ষা করিয়া না চলি; তবে সে জ্ঞান বৃথা। আমরা যদি কর্ম্মের সময় ইশ্বরকে বিস্মৃত হইয়া থাকি এবং কেবল উপাসনার সময়েই তাঁহাকে মনে করি; তবে এখনো তাহার সহিত সে প্রকার সম্বন্ধ নিবদ্ধ হয় নাই। কর্ম্মের সময়ই আপনার কর্ম্ম—উপাসনার সময়ই তাঁহার কার্য্য; এমত নহে। ধর্ম্ম-কার্য্য যাহা কিছু করি; সকলই তাঁহার কার্য্য—তাঁহার প্রিয় কার্য্য; স্বার্থপরতার কুমন্ত্রণাতে যে কিছু ধর্ম্ম-বিরুদ্ধ কার্য্য করি, তাহাই তাঁহার কার্য্য নহে; তাহাই পরিহার করা আমারদিগের প্রাণ পণে কর্ত্তব্য। যখন