পাতা:ভগ্নহৃদয় - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/১০৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
একাদশ সর্গ।
৯৯

কাঁদিয়ে কোহেছি কথা, জানায়েছি সব ব্যথা
যত কথা রুদ্ধ ছিল মরম তলেতে,
এত দিন বলি বলি পারিনি বলিতে!
সেদিন ত কোন লজ্জা ছিলনাকো আর;
কিন্তু গো আবার কেন উদিল আবার!
হেথায় দাঁড়ায়ে আমি রহি একধারে
এখনি দেখিতে নাথ পাবেন আমারে!
ডাকিলেই কাছে গিয়ে, সব লজ্জা বিসর্জ্জিয়ে
একেবারে পায়ে ধোরে কেঁদে গিয়ে কব’
“বল নাথ কি কোরেছি? কি হোয়েছে তব?”
অনিল।—এমন বিষন্ন হােয়ে বােসে আছি হেথা 
তবুও সে দূরে আছে—তবু সে এলনা কাছে,
তবুও সে শুধালে না একটিও কথা!
পাষাণ বজ্রেতে গড়া এ লজ্জা তাহার,
প্রেম বরিষার নদী ভাঙ্গিতে নারিল যদি
দয়াতেও ভাঙ্গিবেনা হেরি অশ্রুধার?
লজ্জার একাধিপত্য যে নিষ্ঠুর মনে,
প্রেম দয়া যে হৃদয়ে বাস করে ভয়ে ভরে
চরণে শৃঙ্খল বাঁধা লজ্জার শাসনে—
অনিল কি করিবিরে লয়ে হেন মন?
তুই চাস মুখে তোর হেরিলে বিষাদ ঘোর
অশ্রুজলে অশ্রুজল করিবে বর্ষণ!
কতনা আদরে তোর মুছাবে নয়ন!
তুই কি চাস্‌রে হেন পাষাণ মুরতি