আদ্যবিভাগের ছেলেদের ঘর থেকে হারমোনিয়ম্ এবং বাঁশির শব্দের সঙ্গে সঙ্গে গানের ধ্বনি উঠ্তে থাকে। ক্রমে রাত্রি আরো গভীর হয়, তখন ছেলেদের ঘরের গানও বন্ধ হ’য়ে যায়, আর দূরে গ্রামের রাস্তার ভিতর দিয়ে দুই একটা আলো চ’ল্চে দেখ্তে পাই। তা’রপরে সে আলোও থাকে না, কেবলমাত্র আকাশজোড়া তারার আলো। তা’রপরে ব’সে থাক্তে থাক্তে ঘুম পেয়ে আসে, তখন আস্তে আস্তে উঠে শুতে যাই। তা’রপরে কখন এক সময়ে আমার পূর্ব্বদিকের দরজার সম্মুখে আকাশের অন্ধকার অল্প অল্প ফিকে হ’য়ে আসে, দুটো একটা শালিকপাখী উস্খুস্ ক’রে ওঠে, মেঘের গায়ে গায়ে সোনালি আভা ফোটে, খানিক বাদেই সাড়ে চারটার সময় আদ্যবিভাগে ঢং ঢং ক’রে ঘণ্টা। বাজ্তে থাকে, অম্নি আমি উঠে পড়ি। মুখ ধুয়ে এসে আমার সেই পূর্ব্বদিকের বারান্দায় পাথরের চৌকির উপর আসন পেতে উপাসনায় বসি। সূর্য্য ধীরে ধীরে উঠে তা’র আলোকের স্পর্শে আমাকে আশীর্ব্বাদ করে। আজকাল সকাল সকাল খেতে যেতে হয়, কেননা সাড়ে ছটার সময় আশ্রমের সকল বালকবৃদ্ধ আমরা বিদ্যালয়ের সাম্নের মাঠে একত্র হই,
পাতা:ভানুসিংহের পত্রাবলী - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২১
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভানুসিংহের পত্রাবলী
১৫