সিংহলে বৌদ্ধধর্ম্ম।
(৩)
ফরাসিস্ পর্য্যটক আন্দ্রে শেভ্রিয়োঁ সিংহলবাসী বৌদ্ধদিগের আচার ব্যবহার ও ধর্ম্মানুষ্ঠানের বিষয় যাহা বর্ণনা করিয়াছেন, তাহা হইতে বৌদ্ধধর্ম্মের সারাংশ বেশ অল্পের মধ্যে জানা যায়। তিনি বলেন, “এই কান্দি সিংহলের একটী পুরাতন নগর—সিংহল-রাজদিগের পুরাতন রাজধানী। এই স্থানে বড় বড় তালবৃক্ষের নীচে কৃষ্ণাভ সলিল একটি সরোবর আছে—তাহার ধারে রাজাদিগের পুরাতন প্রাসাদ অবস্থিত। প্রাসাদের সন্নিকট, সেই মরাল-প্রতিবিম্বিত কৃষ্ণ সরোবরের ধারে একটি পুরাতন বৌদ্ধ মন্দির প্রতিষ্ঠিত। মন্দিরের দ্বারদেশে যে তিনটি বিকট অদ্ভূত মূর্ত্তি রহিয়াছে তাহার অর্থ কি? আর, এই বৌদ্ধ পুরোহিতেরা, যাহারা মন্দিরের মর্ম্মর-শোভিত দালানের উপর দিয়া ক্রমাগত যাতায়াত করিতেছে, ইহারা না-জানি সমস্ত দিন কি চিন্তা করে? মুণ্ডিত-মস্তক, খালি-পা, গেরুয়া বসনের মধ্য হইতে একটি হাত বাহির করা, এই বৌদ্ধ পুরোহিতেরা মন্দিরের বাহির-দালানে নিঃশব্দে গমনাগমন করিতেছে। ইহাদের মুখে একটি রহস্যময় অবর্ণনীয় মধুর হাস্য সর্ব্বদাই বিরাজমান। আমার পাণ্ডা আমাকে মন্দিরের কেন্দ্রবর্ত্তী একটি বৃহৎ প্রাঙ্গনে লইয়া গেল। যে ‘বো’-বৃক্ষ ধ্যানমগ্ন শাক্যমুনিকে পাঁচ বৎসর কাল ছায়া দান করিয়াছিল, তাহারই একটি চারা এই প্রাঙ্গনে প্রতিষ্ঠিত। এই বৃক্ষের তলদেশে আমি নীত হইলাম। সুধীরে মস্তক ঈষৎ অবনত করিয়া সেই পাণ্ডা আমাকে সেই বৃক্ষ হইতে একটি পাতা ছিঁড়িয়া দিল। কান্দি-মঠের মঠধারী আচার্য্য