পাতা:ভারতবর্ষে.djvu/৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।



ব্রাহ্মণ্যশাস্ত্রের মায়াবাদ ও অদ্বৈতবাদ।
৩১

হইয়াছিল, সেই বাষ্পরাশি উত্থিত হইয়া সম্মিলিত হইতেছে, দীপ্তি পাইতেছে, আকাশময় ধাবিত হইতেছে, শীতল হইয়া পুনর্ব্বার ধরাতলে পতিত হইতেছে, আবার অবস্থাবিশেষে, সূর্য্য, সমুদ্র, জীবজন্তু, বৃক্ষলতার আকার ধারণ করিতেছে। এই প্রকারে যাহা আমরা স্বতন্ত্র পদার্থ বলিয়া বিশ্বাস করি, তাহা অনবরত পরস্পরের মধ্যে মিশ্রিত হইতেছে, এবং পরস্পর হইতে বিযুক্ত হইতেছে। যজ্ঞের হোতা যিনি, তিনি বায়ু হইয়া ধূম হইয়া যাইতেছেন। ধূম হইয়া গিয়া বাষ্প হইয়া যাইতেছেন; বাষ্প হইয়া গিয়া মেঘ হইয়া যাইতেছেন, এবং মেঘ হইয়া অবশেষে বৃষ্টিরূপে পতিত হইতেছেন, পরে আবার প্রাণরূপে শস্যাকারে, উদ্ভিজ্জাকারে, বৃক্ষাকারে, সর্ষপাকারে পরিণত হইতেছেন।”

 “উপরে যেরূপ বর্ণিত হইল, তাহার সহিত অদ্বৈতবাদের অতি অল্পই প্রভেদ; এবং দুইটি পথ দিয়া এই অদ্বৈতবাদে উপনীত হওয়া যায়। যেহেতু, সর্ব্বপ্রকার আকৃতি একবার যাইতেছে আবার আসিতেছে, সুতরাং উহারা মায়াময়; উহাদের গুণ, উৎপত্তির পদ্ধতি, উহাদিগের হইতে প্রত্যাহরণ করিয়া লও, তাহা হইলে অবশিষ্ট কি থাকে? কিছুই থাকে না, বৌদ্ধেরা বলে নাস্তি অবশিষ্ট থাকে; জগতের কোন অস্তিত্ব নাই—নাস্তিত্ব ভিন্ন আর কিছুই নাই। ব্রাহ্মণেরা বলেন, ‘যাহা আছে তাহাই আছে—তৎসৎ— তাহা ভিন্ন আর কিছুই নাই। সেই তৎসৎ সর্ব্বগুণ-বিরহিত। যাহা “নেতি নেতি,” যাহা কারণও নহে, কার্য্যও নহে, এক কথায় তাহাই ব্রহ্ম; এই ব্রহ্ম ক্লীবলিঙ্গ শব্দবাচক, অনির্দ্দেশ্য ও বিকারশূন্য। ইনি চিন্তা করেন না, ইচ্ছা করেন না, দর্শন করেন না, জানেন না, ইনি শুদ্ধ ও নির্গুণস্বরূপ। বিশুদ্ধ চিন্তার দ্বারা এই ব্রহ্মকে প্রাপ্ত হওয়া যায়, এই ক্লীবলিঙ্গ ব্রহ্মের উপরিভাগে পুংলিঙ্গ