পাতা:ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা.pdf/১১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০২
ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা

বা চিত্রকরণে কেবল তাহার অনুকৃতিমাত্রই পরিলক্ষিত হয়। অথচ বর্ত্তমান মতের উদ্দেশ্য তাহা নহে। চিত্তাকাররূপে যে চিত্র অন্তরে প্রকাশ পাইয়াছে তাহাকে বাহিরে রূপ দেওয়াই চিত্রীর কার্য। যে চিত্র চিত্রী বাহিরে আঁকিবেন তাহার বিষয় বস্তু কোন দৃষ্ট পুরুষ প্রাণী বা বৃক্ষ লতাদি হইতে পারে কিংবা তাহা শাস্ত্রোক্ত দেব দেবীর রূপ হইতে পারে কিংবা তাহা চিত্রীর মনোগত বা চিন্তিত কোনও ভাব হইতে পারে। শিল্পরত্নে লিখিত আছে“দেবাবা মনুজান্ বাপি মৃগান্ নাগা বিহঙ্গমান। লতাবৃক্ষাদিকান বাথ নাগা সাগরানপি। শ্রোত্রাভ্যাং বাথ নেত্রভ্যাং মনসা বাথ চিন্তিতান। আলিখেৎ কিট্টলেখিন্যা সুমূহুর্তে সুলগ্নকে। স্বস্থচিত্রঃ সুখাসীনঃ স্মৃত্বা স্মৃত্বা পুনঃ পুনঃ” (২৪৮ পৃঃ)। এই বচন হইতে ও পূর্বোক্ত প্রক্রিয়াটি উপলব্ধ হয়। চিত্রী যাহা কিছু দেখিয়াছেন, যাহা কিছু চিন্তা করিয়াছেন, যাহা কিছু শুনিয়াছেন বারংবার স্মৃতিদ্বারা তাহা চিত্তে দৃঢ় করিয়া সেই দৃঢ়ীভূত চিত্তাবস্থাকে বাহিরে লেখনীদ্বারা প্রকাশ করিবেন। পুনঃ পুনঃ স্মরণেই সমাধির উৎপত্তি হয়। যোগসূত্রের ব্যাসভাষ্যে (১-২০) লিখিত আছে “স্মৃত্যু- পস্থানে চ চিত্তমনাকুলং সমাধীয়তে”। শিল্পরত্নে (২৫৪-পূঃ) আরও লিখিত আছে যে এইরূপে চিত্তগত আকারকে বাহিরে ফুটাইয়া তাহাতে অনুরূপ ভাব ও সেই ভাবানুরূপ মুখ চক্ষু নাসিকা ওষ্ঠ হস্ত পদাদির চাঞ্চল্য ব্যাপার ফুটাইয়া তুলিবে এবং যথোচিত ক্রমে বর্ণবিন্যাস করিয়া নিম্নেম্নতাদি স্থানে বিনি বেশ করিবে। “এবং স্বষোচিতং স্থানং মনসা নিশ্চিত্য বুদ্ধিমান্।