পাতা:ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা.pdf/৭৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬৪
ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা

তানতায় আমাদের শিল্পীর চক্ষুতে মনুষ্যলোক উদ্ভাসিত হইয়াছে। আমাদের জন্মান্তরবাদে বলে যে, মানুষই যেকোন প্রাণী বা উদ্ভিদ হইয়া জন্মগ্রহণ করিতে পারে। বুদ্ধের পবিত্র আখ্যানগুলিতে বলে যে বুদ্ধ হস্তী রূপে মাতৃকুক্ষিতে প্রবেশ করিলেন। আমাদের কোন কোন দেবতার উদ্ভিদপত্নী প্রসিদ্ধ আছে, সূর্যের পদ্মিনী, চন্দ্রের কুমুদিনী। প্রতি দেবতার পূজার জন্য তাহাদের প্রিয় বলিয়া বিশেষ বিশেষ পুষ্পের বা বৃক্ষের প্রসিদ্ধি আছে। বিল্বপত্র না হইলে শিবের পূজা হয় না, তুলসীমঞ্জরী না হইলে দামোদরের পূজা হয় না, অপরাজিতা, অতসী বা জবা না হইলে শক্তিপূজা চলে না। আমরা নদী পূজা করি, পাহাড় পূজা করি, বেল নিম অশ্বথ, বট, তুলসী পূজা করি, আমরা বট ও অশ্বথের বিবাহ দিয়া পুণ্যার্জন করি। আমরা গোমাতার চরণ বন্দনা করি। বিশেষ বিশেষ পূজার সময় ইন্দুর, গর্দভ, ময়ূর, সিংহ প্রভৃতিরাও পূজা হইতে বঞ্চিত হন না। আমরা ঘরের সাপ মারি না। অহিংসা আমাদের দেশের মূলমন্ত্র, কাজেই সাহিত্যের সঙ্গে সঙ্গে, দর্শন ও ধর্মের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের শিল্প যে মানুষকে ও তাহার ব্যক্তিত্বকে পৃথক্ করিয়া দেখিলে না, অনন্ত আকাশের তলে বিশ্বের সভামণ্ডপে সমগ্র জীবলোকের আসন সন্নিধানে তাহাদেরই সহিত একতানতায় মানুষকে আঁকিয়া তুলিতে চেষ্টা করিবে, ইহাতে আর বিস্মিত হইবার কি কারণ আছে। সর্বত্রই সাহিত্য, শিল্প, সঙ্গীত জাতীয় প্রকৃতি, জাতীয় সাধনা ও জাতীয় আদর্শকে প্রকাশ করে—এই সাধনা