পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩১৭.djvu/২৭২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৪৭ বর্ষ, দশম সংখ্যা । সত্যের এই পরিপূর্ণতাকে এই সামঞ্জস্তকে পাবার ক্ষুধা যে কি রকম প্রবল, এবং তাকে আপনার মধ্যে কি রকম করে গ্রহণ ও ব্যক্ত করতে হয় মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথের সমস্ত জীবনে সেইটেই প্রকাশ হয়েছে । র্তার স্নেহময়ী দিদিমাব মৃত্যুশোকের আঘাতে মহর্ষির ধৰ্ম্মজীবন প্রথম জাগ্রত হয়ে উঠেই যে ক্ষুধার কান্না কেঁদেছে তার মধ্যে একটি বিস্ময়কর বিশেষ ত্ব আছে। শিশু যখন থেলবার জন্তে কঁাদে তখন হাতের কাছে যে-কোনো একটা থেলন। পাওয়া যায় তাই দিয়েই তাকে ভুলিয়ে বাখা সহজ কিন্তু সে যখন মাতৃস্তষ্ঠের জন্তে কাদে তখন তাকে আর-কিছু দিয়েই ভোলাবার উপায় নেই। যে লোক নিজের বিশেষ একটা হৃদয়বেগকে কোনো একটা কিছুতে প্রয়োগ করবার ক্ষেত্রমাত্র চায় তাকে থামিয়ে রাথবার জিনিষ জগতে অনেক আছে--কিন্তু কেবলমাত্র ভাবসম্ভোগ যার লক্ষ্য নয় যে সত্য চায়, সে ত ভুলতে চায়না, সে পেতে চায় । কাজেই সত্য কোথায় পাওয়া যাবে এই সন্ধানে তাকে সাধনার পথে বেবতেই হবে—তাতে বাধা আছে, দুঃখ আছে, তাতে বিলম্ব ঘটে, তাতে আত্মীয়ের বিরোধী হয়, সমাজের কাছ থেকে আঘাত বর্ষিত হতে থাকে –কিন্তু উপায় নেই—তাকে সমস্তই স্বীকার করতে इंग्रं । এই ষে সত্যকে পাবার ইচ্ছ। এ কেবল জিজ্ঞাসা মাত্র নয় কেবল জ্ঞানে পাবার ইচ্ছা! নয়—এর মধ্যে হৃদয়ের দুঃসহ ব্যাকুলত৷ আছে ;–র্তার ছিল সত্যকে কেবল জ্ঞানরূপে নয় আনন্দরূপে পাবার বেদন । এইখানে || ዓ >ፃ তার প্রকৃতি স্বভাবতই একটি সম্পূর্ণ সামঞ্জস্তকে চাচ্ছিল । আমাদের দেশে এক সময় বলেছিল—ব্রহ্মসাধনার ক্ষেত্রে ভক্তির স্থান নেই এবং ভক্তিসাধনার ক্ষেত্রে ব্রহ্মেব স্থান নেই কিন্তু মহর্ষি ব্ৰহ্মকে চেয়েছিলেন জ্ঞানে এবং ভক্তিতে, অর্থাৎ সমস্ত প্রকৃতি দিয়ে সম্পূর্ণ করে তাকে চেয়েছিলেন– এই জন্তে ক্রমাগত ননি। কষ্ট নানা চেষ্টা নান গ্রহণ বর্জনেব মধ্য দিয়ে যেতে যেতে যতক্ষণ তার চিত্ত র্তার অমুতম ব্রহ্মে, তার আননের ব্ৰক্ষে, গিয়ে না ঠেকেছিল ততক্ষণ একমুহূৰ্ত্ত তিনি থামৃতে পাবেনি। এই কারণে র্তার জীবনে ব্ৰহ্মজ্ঞান একটি বিশেষত্ব লাভ করেছিল এই যে, সে জ্ঞানকে সৰ্ব্বসাধারণের কাছে না হননি । জ্ঞানীর ব্ৰহ্মজ্ঞান কেবল জ্ঞানীর গণ্ডীর মধ্যেই বদ্ধ থাকে। সেই জন্তেই এদেশের লোকে অনেক সময়েই বলে থাকে ব্ৰহ্মজ্ঞানের আবার প্রচাব কী ! কিন্তু ব্ৰহ্মকে যিনি হৃদয়ের দ্বারা উপলব্ধি করেছেন তিনি একথা বুঝেছেন ব্রহ্মকে পাওয়া যায়, হদয়ের মধ্যে প্রত্যক্ষ পাওয়া যায়-- শুধু জ্ঞানে জানা যায় তা নয়, রসে পাওয় যায় কেননা সমস্ত রসের সার তিনি–রসো বৈ সঃ । যিনি হৃদয়-দিয়ে ব্রহ্মকে পেয়েছেন তিনি উপনিষদের এই মহাবাক্যের অর্থ বুঝেছেন : — যতো বাচো নিবর্তস্তে অপ্রাপ্য মনসা সহ আনন্দং ব্রহ্মণে বিদ্বান ন বিভেতি কুতশচন । জ্ঞান যখন তাকে পেতে চায় এবং বাক্যপ্রকাশ করতে চায় তখন বার বার ফিরে ধরে তিনি ক্ষণস্তু