পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩২০.djvu/২৬৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৭শ বর্ষ, নবম সংখ্যা ভয়ানক ঝড় । সবগুলো হাল আর সমস্ত এঞ্জিনের ক্ষমতাকে নষ্ট করে দিয়ে আমাদের যেন একেবারে দুর্গের কামানের উপর ছুড়ে ফেলে দেয়, এম্‌নি চেষ্টা । জীবন-মবণের ভীষণ যুদ্ধ-সে।” আমি জিজ্ঞাসা করিলাম, “আচ্ছা, এদিকে কখনও জাহাজ-টাহাজ ভেঙ্গেচে কি ডুবেচে শোনা যায় ?” "ও মশায়, ভগবান রক্ষে করুন। এই যে জায়গাটি এটিত ধ্বংসের একটি বড় রকম আস্তানা। কেন, ঐ যে উপসাগরটা দেখা যাচ্চে—স্পেন যুদ্ধে রাজা ফিলিপের দু-দুখানা প্রকাণ্ড প্রকাণ্ড ভাল জাহাজ তার পেট ভৰ্ত্তি লোকলস্কর নিয়ে ঐ খানটায় একেবারে তলিয়ে গেছল। এই জলের চাদরখানা দেখ চেন—এ যদি বোবা না হোত,আর ঐ বাকের ডান দিকে যে নিউজ উপসাগরটা দেখা যাচ্চে—ওরা যদি নিজের নিজের গল্প বলতে পারত, তাহলে হাজার হাজার ঝুড়ি বোঝাই হয়ে যেত। যখন শেষ .বিচারের দিন আসবে, আমার বোধ হয় ঐ ঠাগু নোনা জলট টগবগ করে ফুটুতে থাকবে, ওর তলায় যে অগুণতি হতভাগা ঘুমিয়ে রয়েচে—তাদের নিশ্বাসে সেদিন সারা সমুদ্রের জল তপ্ত হয়ে ফুটে উঠবে।” স্বৰ্য্যাস্তের স্নান আলো এস্থারের ঘন চুলে ঢাকা ছোট মুখখানির উপর পতিত হইয়৷ তাহার পরদুঃখকাতর মুখখানিকে জেমিসনবর্ণিত হতভাগ্যদিগের জন্ত রুদ্ধ বেদনায় পাণ্ডুর করিয়া দিল। প্রকৃতির মানিমার অংশ তাহার বহিঃপ্রকৃতির নয়,—অন্তঃপ্রকৃতিকে শুদ্ধ মেন~~তাহার স্নান ছায়ালোকে মলিন R সোধ-রহস্য సెసెt করিয়া সুনীল নেত্রে ব্যথিত বেদনায় সজল কবিয়া দিল,—যেন আলোক দীপ্ত সুনীল তরল মেঘে সমাচ্ছন্ন-একটু বাতাস উঠিলেই এখনি ঝরঝর করিয়া তাহার রুদ্ধ বক্ষের পাষাণভার বিদীর্ণ করিয়৷ শীতল স্নিগ্ধতা ঢলিয়া দিবে। একটা ব্যথিত দীর্ঘশ্বাস ত্যাগ করিয়া এস্থার কহিল, “আহা,— আমরা যত দিন এখানে থাকৃব —আর যেন কখনও এমন দুর্ঘটনা না হয়।” যেখানে আকাশেব সহিত সমুদ্র মিশিয়া এক হইয়া গিয়াছে, সেই দিগন্ত সীমায় চক্ষু রাখিয়া, চিন্তিত মুখে, মস্তকেব সাদা চুলের ভিতর ঘন ঘন অঙ্গুলি চালনা করিতে করিতে বৃদ্ধ জেমিসন কহিল, “যদি পশ্চিম দিক্‌ থেকে বাতাসট ওঠে —তাহলে ঐ যে পাল খাটিয়ে জাহাজগুলো যাচ্চে,–ওদের লোকের বড় আমাদের বিষয় মনে করবে না। উত্তর চ্যানেলে কোথাও একটু মাথা রাখবার জায়গা নেই ত? দুরে—ঐ ষে জাহাজখানা যাচ্চে, যদি ঝড়ের আগে, এই “ক্লাইডে’র মধ্যে ওকে ঢোকাতে পারে, তবেই ওর কাপ্তেন খুব খুশী হয়ে যাবে।” - আমি জেমিলন-কথিত জাহাজ থানার প্রতি দৃষ্টিপাত করিয়া চিন্তিতভাবে কহিলাম, “আমার ত মনে হচ্চে, জাহাজ থানা দাড়িয়েই আছে, ও কি চলতে পারবে ?” সমুদ্রের নাড়ী যেমন দ্রুত তালে কম্পিত হইতেছিল,— জাহাজখানার কালে রঙের হাল, আর রৌদ্রমাথা চক্‌মকে পালগুলিও তেমনি দ্রুত কম্পনে নাচিতেছিল । আমি পুনরায় কহিলাম, “জেমিদন, আমাদেরই বোধ হয়