পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩২০.djvu/৩১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

So 88 কথা । আমি তখন সৈন্তদলের সহকারী সেনাপতি। সেই বৎসর একটা খুব বড় যুদ্ধ হয়,—সারা দেশটায় হাহাকার পড়িয়া যায় ; কত লোক যে সে যুদ্ধে পাণ দিয়াছিল তাহা গণনা করা কঠিন । সেই সৈন্যদলের মধ্যে আমার একট বন্ধু ছিল,—সে রামদীন । আমি তাহাকে ঠিক ভায়ের মতই ভাল বাসিতাম, স্নেহ কবিতাম ; সেও যে আমায় তেমনি ভাবে স্নেহ করিত সে কথা আমায় অবশুই স্বীকার করিতে হইবে । রামদীন আমার অকপট মিত্র ছিল। আমাদের দলেব যিনি সেনাপতি ছিলেন রামদীনের সহিত র্তাহার কোন দিনই মনের মিল ছিল না । কি জানি কেন তিনি তাহাকে একবারেই দেখিতে পারিতেন না—মোটেই পছন্দ করিতেন না । তাহার নাম ছিল সেনাপতি আদভ। লোকটা ভারী বিলাসী ও কুচরিত্র । রামদীনও কখন তাহাকে সুনজরে দেখে নাই—র্তাহার ছায়া মাড়াইতেও সে ঘৃণা বোধ করিত। আমরা যখন গুপ্তচরের মুখে শুনিলাম, শত্র আমাদের গ্রামের প্রায় সাড়ে তিন ক্রোশ দূরে ছাউনী ফেলিয়াছে তখন আর আমরা নিশ্চিন্ত থাকিতে পারিলাম না । আমরাও যথা সম্ভব যুদ্ধের আয়োজন করিতে ব্যস্ত হইলাম। যে রূপেই হউক শক্রকে পরাজিত করাই তখন আমাদিগের প্রধান উদ্দেশু ;—আমরা সংব প্ল করিলাম প্রাণ দিয়াও আমরা আমাদিগের এ উদ্দেশু সাধন করিব,— দেশের ও প্রভুর মান রক্ষা করিব। কিন্তু তখন জানিতাম না যে ভাগ্যলক্ষ্মী আমাদিগের প্রতিকুল । ভারতী পৌষ, ১৩২০ রাত্রি তখন ঠিক কত আমি জানি না । হঠাৎ আমার বস্ত্রাবাসের মধ্যে কাহণব পদশব্দ হইল । সেইমাত্র আমার একটু তন্ত্র আসিয়াছিল,—সে শব্দে আমার তন্ত্র ছুটিয়া গেল ; দৃঢ় মুষ্টিতে পিস্তলটা চাপিয়া ধরিয়া জিজ্ঞাসা করিলাম,—“কে ?” স্পষ্টস্বরে উত্তর হইল,—“আমি রামদীন ?” আমার একটু উৎকণ্ঠ হইল, জিজ্ঞাসা করিলাম,—“রামদীন তুমি ? এত রাত্রে হঠাৎ আমার কাছে—ব্যাপার কি ? শক্ররা শিবির আক্রমণ ক’রেছে নকি ?” "না ভাই সে রকম কিছু নয়, আলোটা জাল আমি ব’লচি।” আমার যথেষ্ট কৌতুহল জন্মিল। আমি আলো জালিয়া রামদীনের মুখের দিকে চাহিয়া দেখিলাম। কি দেখিলাম ? দেখিলাম তাহার মুখ দারুণ ক্রোধ ও ঘৃণায় পূর্ণ ! আমি সোৎকণ্ঠে জিজ্ঞাসা করিলাম –“ব্যাপার কি বল দেখি ?” “আমি তোমার কাছে বিদায় নিতে এসেছি।” “বিদায় নিতে এসেছ ? এত রাত্রে ? কেন, কেন, হঠাৎ তোমার হ’ল কি ? আমি যে ব্যাপারটা কিছুই বুঝতে পাচ্চি না । হ’য়েছে কি বল দেখি ?” “নতুন কিছুই নয়, সেই পুরাণ ঝগড়া । আজ হঠাৎ সেনাপতির সঙ্গে আমার বচস হয় তাতে তিনি আমায় বঁাদির বাচ্চ ব'লেচেন আমি কিন্তু. এর জন্তে তাকে কখনও ক্ষম ক’রব না । প্রতিজ্ঞ ক’রেচি র্তারই রক্তে মা’র এ মিথ্যা কলঙ্ক মুছব। আমার প্রতিজ্ঞ আমি অক্ষরে অক্ষরে পালন ক’রব।”