পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩২০.djvu/৪৭২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৭শ বর্ষ, একাদশ সংখ্যা আছেন যারা নিজের ধারণাকেই অভ্রান্ত বলে বিশ্বাস কবেন । জ্ঞানের সর্বতোমুখী বিকাশে এ ভাবটা সহজেই কেটে যায় ।” নীরবে নতশিরে সমুদ্রবেলায় বালুকার উপর দিয়া আমি তাহার অনুসৰণ করিয়৷ চলিতেছিলাম, তাহার বাক্যের কোন উত্তব দিলাম না । সমুদ্রের ধারে উচ্চ বালুক তীর যেন পৰ্ব্বতের অনুকরণে যোজন ব্যাপী হইয়৷ গিয়াছে। দক্ষিণদিকে রৌপ্যের মত চকুচকে জলরাশি ; –সেই রূপার পাতখানা ভাঙ্গিয়া দিবার জন্ত কোন জাহাজ বা কিছুই নাই, জনহীন সমুদ্র তীবে—সেই অদৃষ্টপূৰ্ব্ব বৌদ্ধ সন্ন্যাদী আর আমি ! প্রকৃতির সেই নির্জন পথে দুইটিমাত্র যাত্রী পাশাপাশি চলিতেছিলাম, সহকারী কপ্তেন হকিংস এই সন্ন্যাসীর বিরুদ্ধে যে সব. ভয়ঙ্কর অভিযোগ আনয়ন করিয়াছিলেন, জেনারল হিথারষ্টনের সভয় উক্তি হইতে ইহাদের বিরুদ্ধে যে যুক্তি উপস্থিত,—এখন এই সুগভীর নির্জনতার ভিতর সেই চিস্ত আমার মনে ধীরে ধীরে জাগিয়া উঠিতেছিল। মনে হইল স্বেচ্ছায় নিজেকে সেই অসীম ক্ষমতাশালীর হস্তে শিশুর করষ্কৃত ক্রীড়নকের মতই সম্পূর্ণরূপে দ্যস্ত করিয়া দিয়া হয়ত ভাল কাজ করি নাই । তথাপি সেই মহত্বব্যঞ্জক উন্নত মূৰ্ত্তির কালে চোখের শাস্ত করুণকোমল দৃষ্টির বিরুদ্ধে আমার অন্তরাত্মাকে বিদ্রোহী করিতে আমি একান্তই অক্ষম । সমুদ্রের জলকণশিক্ত বাতাস আমার মাথার চুলগুলি দোলাইয়া দিয়া মৃদুগুঞ্জন মৰ্ম্মর ধ্বনিতে যেমন ক্ষীণভাবে বহিয়া গেল, আমার অন্তরের অপ্রিয় চিন্তাও তেমনি , অস্পষ্টভাবে মনের কোণে ছায়া ফেলিয়াই লৌধ-রহস্ত s२९> মিলাইয়া গিয়াছিল। সে মুখ হয়ত কাহারও কাহারও নিকট ভীতিপ্রদ হক্টতে পারে— কিন্তু সে হৃদয়ে অদ্যায়ের স্থান থাকিতে পারে না । সে হস্তুে নির্দোষীর প্রতি অন্তায়দণ্ড বর্ধিত হওয়া একান্ত অসম্ভব। বনকুঞ্চিত স্ন প্রচুর শ্মশ্রীরাজিমণ্ডিত অতি স্থদর মুখেব পানে চাহিয়া দেখিলাম। সেই সঙ্গে তাহার পরিহিত পরিচ্ছদের প্রতি দৃষ্টি আকৃষ্ট হইয়া আমার মনে হইল এ মুখে এ শরীরে সে বেশ মানায় নাই। আমি তাহাকে মনে মনে যে মুদৃপ্ত ছাটকাট ওয়াল রাজার পোষাক পবাইয়। দিলাম সে অঙ্গে তাহাই শোভনীয়। ইহাতে র্তাগর মধুরত আর সৌন্দর্য যেন সবটুকু অন্তরের ভিতর অনুভব করা যায় না । এ যেন গল্পকথার রাজপুত্র ছদ্মবেশে সন্ন্যাসী সাজিয়াছেন। আমরা যেখানে আসিয়া পৌছিয়াছিলাম সেও একটি নির্জন স্থান ; একখানি ছোট কুঁড়ে ঘর –বোধ হয় দুই তিন বৎসর পূৰ্ব্বে সেই গৃহের অধিকারী তাহার সমস্ত স্বত্ব নিস্বার্থভাবে ত্যাগ করিয়া চলিয়া গিয়াছে। সাম্নের দরজাখানা হয় ত ঝড়ে উড়িয়া গিয়াছে—নতুবা কোন দরিদ্র লোক লইয়া গিয়া জালানি করিয়াছে । ঘরখানা অহিফেনসেবী পুরাতন রোগীর ন্তায় – এখনও তাহার জীর্ণ পঞ্চর কয়খানার জোরে খাড়া হইয়া দাড়াইয়া আছে। এই অদ্ভুত প্রকৃতির মানবেরা জমীদারের সাগ্রহ নিমন্ত্রণ, মুখপূর্ণ প্রাসাদবাস ত্যাগ করিয়া এইখানেই নিজেদের বাসস্থান স্থির করিয়াছেন । স্কটল্যাণ্ডের মধ্যে সৰ্ব্বাপেক্ষা ভিখারী যে সেও সম্ভবতঃ এই গৃহে বাস করিতে ঘুণ বোধ