శి'R छांब्रडी । আষাঢ়, ১৩১৭ প্রবাসী । গ্রাম্যফুলবিদ্যা শেষ করিয়াই প্রবাসীর দলে ঢুকিলেও গত পাঁচ ছয় বৎসর যাবৎ প্রকৃত প্রবাসী হইয়া দাড়াইয়াছি। আজ প্রবাসী জীবনের কিঞ্চিৎ অভিজ্ঞতা পাঠকগণের নিকট নিবেদন করিব। প্রবাসী জীবনে শাস্তি নাই । নিরবচ্ছিন্ন চিন্তাম্রোত প্রবাসীর হৃদয়ে কিরূপ অশাস্তির উদ্রেক করে তাহ যাহারা বঙ্গের আবহাওয়ায় পরিবর্দ্ধিত হইয়tছেন এবং গৃহের স্নেহ-মমতা বিচ্ছিন্ন করিয়া ভিন্ন প্রদেশে না গিয়াছেন তাহীদের পক্ষে ধারণা করা সুকঠিন। সাময়িক উত্তেজনায় অথবা উদরান্নের সংস্থানে কখন কখন আমরা স্থানাস্তরে যাইতে উৎসুক হইয়া উঠি বটে, কিন্তু কতিপয় দিবসেই সে উত্তেজন সে ঔৎসুক্য একেবারে নিৰ্ব্বাপিত হইয়া যায়। এমন কি তখন যেন মনে হয় আত্মীয় স্বজনপরিবৃত হইয়৷ উদরামের তাড়ন সহ করাও 5C ( : 1 যখন বিদেশযাত্র উদেশে প্রস্তুত হইতে ছিলাম তখন যেন কোনো দৈবশক্তি হৃদয়ে বল সঞ্চার করিয়া দিতেছিল। আত্মীয়স্বজন এবং বন্ধুবান্ধবদের ভয় প্রদর্শন, এবং অনুনয় বিনয় উপেক্ষা করিয়া সপ্তরথীর স্তায় অসীম সাহসে ভর করিম। আমরা সাতজন কলিকাতার ঘাটে জাহাজে চড়িলাম। আত্মীয় স্বজন সাশ্রলোচনে ডিঙ্গির সাহায্যে খিদিরপুর পৰ্য্যন্ত আমাদের জাহাজের অসুগমন করিয়াছিলেন। আমরা সকলেই নূতন সাহেব সাজিয়া অতি ফুৰ্ত্তির সহিত লম্ফ কম্প দিয়া জাহাজে উঠিয়াছিলাম সত্য, কিন্তু জাহাজ যখন কলিকাতার সীমানা অতিক্রম করিয়া মেটেবুরুজ গার্ডেনরিচের নিকট গিয়া দ্রুত গতিতে সাগর উদ্দেশে ছুটিল তখন চাহিয়া দেখিলাম আমার দ্যায় সকলেই নিঃশব্দে মানবদনে গালে হাত দিয়া বসিয়া আছেন । চক্ষু সকলেরই রক্তবর্ণ ; কাহারও কাহারও দুই এক ফোটা অশ্রুঞ্জলও কপোল বাহিয়া পড়িতেছিল । সমস্ত দিন কত কি নূতন নূতন দৃপ্ত দৃষ্টি পথ অতিক্রম করিয়া চলিয়া গেল কিন্তু অস্তরে অন্তরে সকলেই মায়ার তাড়নায় জর্জরিত হইতেছিলাম বলিয়া, কিছুই ভাল করিয়া দেখা হইল না । সন্ধ্যার প্রাক্কালে জাহাজ সমুদ্রে পড়িল, তারপর একে একে সকলেই শয্যাগত হইলাম, বলাবাহুল্য দুই দিন অনাহারে অনিদ্রীয় শয্যাশায়ী হইয়া সকলেই বিদেশ যাত্রায় ধিক্কার দিয়াছিলাম । তার পর জাপানে পৌছিলে ভাষা এবং আহাৰ্য্য বিভিন্নতায় প্রথম প্রথম এতই অমৃবিধা বোধ হইত যে তখন সোনার ভারত কেন ছাড়িয়াছিলাম বলিয়া আরও অনুeাপ জন্মিত। ভাষার অসুবিধা সম্বন্ধে একটা ক্ষুদ্র দৃষ্টান্ত এস্থলে উল্লেখ করি। একদিন জনৈক জাপানী বন্ধুর সহিত রাস্তায় বেড়াইতে বাহির হইয়াছি। স্থানে স্থানে বিজ্ঞাপন পত্রে বড় বড় অক্ষরে “রাই ওন” দেখিতে পাইয়া বন্ধুকে উহার অর্থ জিজ্ঞাসা করিলাম । তিনি বলিলেন রাইওন অর্থাৎ দন্তমাৰ্জন । তখনই দন্তমাৰ্জনের প্রতিশব্দটী মুখস্থ করিয়া রাখিলাম। অপর এক দিন
পাতা:ভারতী বৈশাখ-আশ্বিন ১৩১৭.djvu/২২৫
অবয়ব