পাতা:ভারতী বৈশাখ-আশ্বিন ১৩১৭.djvu/৩০৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ہفواج মধ্যে ধরা দেয় না। তবে একটা অtণ তিনি সকল সময়ই ছাড়িতে পারেন না তাই মনের এমন সঙ্কট অবস্থাতেও নিকটবৰ্ত্তী সমস্তাটার অপেক্ষ দূরস্থ সঙ্কটের কথাই তাহার মনে লৌহদণ্ডের মতন আঘাত করে। বেদনার চেয়ে সময়ে সময়ে এই ক্লিষ্টারের জাল আরও ভয়ানক। মনের এ অবস্থাকে ছাড়াইয়া চলিবার আর যেন কোন দিক দিয়া পথ পাওয়া যাইতেছিল না। চারিদিক হইতে সব দ্বারগুলা একে একে রুদ্ধ হইয়া যাইতেছে, অন্ধকার ক্রমে ঘন ও ঘনীভূত হইয়া আদিতেছে, অন্ধকারে যে ক্ষুদ্র শুকতারাটি আপনার সবটুকু স্নিগ্ধ আলোক ঢালিয়া দিয়া তাহাকে পথ দেখাইয়া লইয়। যাইতেছিল সেও সহস৷ এই নিবিড় অন্ধকার রাশির মধ্যে ক্ষুদ্র বিন্দুটির মতন লুপ্ত হইয়া গেল। এখন এই গভীরতম অন্ধকারে এই চারিদিককার রুদ্ধদ্বার দুর্গকারার নির্জন পথে দৃষ্টিহীন অন্ধকে কে হাত ধরিয়া পথ চিনাইয়া এখান হইতে উদ্ধার করিয়া লইয়। যাইবে ? অন্ধকারে ভীত বালক যেমন নির্ভরতার সহিত মাতুবক্ষে মুখ লুকাইয়। নিজেকে ঢাকিতে চায় তেমনি করিয়া শুীমাকান্ত ব্যাকুল ভাবে মা বলিয়া একখানি স্নেহ বক্ষের ছায়াতলে আত্ম সমর্পণ করিতে গিয়া স্বপ্ন দৃষ্টের মতন চমকিয়া ফিরিয়া আদি লেন। হায় মাতৃহারা ! কোথায় আজি সে কোথায় ? কোথা মা কোথা মা মাগে৷ তুই ফিরে আয় ! শুামাকান্ত সবচেয়ে আপনাকেই বেশি তিরস্কার করিতেছিলেন । যে সময় পূৰ্ব্বকালের লোকের সংসারাশ্রমকে পরিত্যক্ত বস্ত্র খণ্ডের মতন অনায়াসে অবহেলার সহিত পরিত্যাগ उठां ब्रडी । শ্রাবণ, ১৩১৭ করিয়া বানপ্রস্থ অবলম্বন করিয়া পারলৌকিক চিন্তায় মনঃসংযোগ করিতেন,—আর তিনি কিনা ঠিক সেই সময় একটি শিশুর স্নেহে অন্ধ হইয় তাহাকে কোলে পাইবার জন্য যে কোন উপায় খুজিয়া উন্মাদের মতন বেড়াইতেছেন । তাহার কি একথাও ভাবা উচিত ছিল না যে, তাহার খেয়ালের দায়ে তিনি যাহাকে কাছে টানিতেছেন তাহার জীবন কেবল মাত্র তাহাকে খেলার সুখদান করিবার জন্তই স্বঃ হয় নাই। রেশমে সোনায় হীরায় সাজাইয়া কাচের দেরাজে সাজtষ্টয়া রাখtতেই তাহার জীবনের চরমমুখ ও পরিণতি নয়। এখন তাহার ঘরের ফুষ্ট শিশু যদি র্তাহীকে ঠেলিয়া তাহার সে যত্নের প্রতিমা সিংহাসন চু্যত করিয়া ডাকের সাজ খুলিয়া কাদামাটি মাখাইয়া ফেলিয় দেয় তিনি তাহাকে কেমন করিয়াই বা রক্ষা করিবেন ? যে মূৰ্ত্তিউপাসক নয় তাহার সাক্ষাতে দেবতার স্থাপনা করিতে যাওয়াই যে প্রথমে বিড়ম্বন হইয় ছিল ! যে প্রতিমায় সাধক মহাশক্তির পূর্ণমূর্তি ভক্তির চক্ষে দেখিতে পায় অবিশ্বাণীর দৃষ্টিতে সে মাটি খড়ের জড় শরীর লইয়া প্রকাশ পায় মাত্র, চিন্ময়ীরূপে আবিভূত হয় না। এই সোজা কথাটা বুঝিতেই কি সবচেয়ে দেরি হইল ! রজনীনাথের মেয়ে তাহার হৃদয়ে যে অধিকার বিস্তৃত করিয়াছিল তাহা লইয়া খুলী থাকিলেই তো চলিতে পারিত ; মানসমন্দিরেই ত দেবী পুজার ফল অধিক। রামপ্রসাদ গাহিয়াছিলেন “কাঠ খড় আর মাটির গঠন কাজ কি রে তোর-লে গঠনে, আয় মনোময়ী প্রতিম গড়ি পূজা করি সঙ্গোপনে”।