পাতা:ভারতী বৈশাখ-আশ্বিন ১৩১৭.djvu/৩৭৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

७8* वर्ष, श्रृं$भ भ१५Tां । ফুলের গাছ, অজস্র ফুলে ভরিয়া গিয়াছে ; তাছারি মিষ্ট গন্ধ বাতাসে ভাসিয়া আসিতেছিল। নোনাগাছে বসিয়া একটা কাক নিঝুম ভাবে ভিজিতেছিল ! পাতার ফাক দিয়া বৃষ্টির ফোট তার কালো পালকের উপর পড়িতেছিল—কাকটা মাঝে-মাঝে চক্ষু মুদিতেছিল— আর কখনো-বা সিক্ত শাখায় চঞ্চু ঘসিতেছিল। চারিধারে কোন সাড়া-শব্দ নাই, শুধু বৃষ্টির একটা ঝমঝম শব্দ । নিরীহ কাকটাকে অবলম্বন করিয়াই রমেন্দ্রনাথের কল্পন ধীরে ধীরে আসরে নামিল ! সে ভাবিল, আহা বেচারা পার্থী ! নিতান্ত নিঃসঙ্গ, আশ্রযুহীন ! কোথায় তার গৃহ, কোথায় তার সঙ্গীর দল, কোথায় তার প্রিয়া, আর কোথায়ই বা সে ! তাহারি মত নিঃসঙ্গ, অসহায় অবস্থা আজ রমেন্দ্র - নাথেৰ ! বিশ্বের বিরহব্যথা আজ এমন বর্ষ। পাইয় তাহার হৃদয় ঐ মুদুব কালে মেঘের মতই ভারক্রান্ত করিয়া তুলিয়াছে ! উঠিয়৷ জানালার ধারে আসিয়া রমেন্দ্রনাথ দাড়াইল । ভাবিল,একবার চাপাতল ঘুরিয়া আসি ! কিন্তু মায় বারণ করিয়াছে । মায় লিখিয়ছে,— চিঠিখনি তখনে “কাব্যগ্রন্থের মধ্যে রক্ষিত ছিল-রমেন্ত্রনাথ আবার চিঠি পড়িল,— অন্তান্ত কথার পর মায়া লিখিয়াছে,—“তুমি চিঠিতে যা-তা আমন করে লিখোনে—তোমার চিঠি এলে সকলে এখানে বড় টানাটানি করে, বিশেষ সেজদিদি। তার কাছে ছাড়ান্‌ পাবার জো নাই । আর ভূমি এখানে বেড়াতে আসবে কি না আমার মত চেয়েছ তাই লিখছি—তুমি এসে না—আর ত তিন দিন পরেই আমি যাব ! এমনি ত তুমি এদিকে বড় একটা আসন, বিয়ের সময় যা রসঙ্গ । ❖¢ቁ ছদিন এসেছিলে, তার পর আবার-এখন যদি আস ত, সবাই ঠাট্টা করবে—বলবে, মায়া আছে বলেই এত ঘন-ঘন আসে। লক্ষ্মীটি তোমার পায়ে পড়ি, তুমি এলে আমি ভারী লজ্জা পাব।” ইত্যাদি । রমেন্দ্রনাথের বুকটার ভিতর কে যেন পাথরের ঘা মারিতেছিল। পকেটে চিঠি রাখিয়া সে বাহিরের দিকে চাহিল । নিষ্ঠুর, নিষ্ঠুর, চিঠিতে দুইটা প্রাণের কথা বলিয়, তৃপ্তি পাইবার চেষ্টা করি, তাহাতেও তোমার লজ্জা ! একবার গিয়া একটা চকিত চাহনিমাত্র আকাঙ্ক্ষা করি, তাহাতেও তোমার আপত্তি ! কেন এমন কর, মায়া ! উদ্যত, উন্মুখ, পিয়াসী প্রাণীকে নিরাশার শাসনে এমন অযথা ব্যথিত কর । বেশ নয়, দীর্ঘ নয়, শুধু এতটুকু মৃদু স্পর্শ ! ওগো প্রিয়া, ওগো চিরপ্রিয়া, তাহ হইতেও বঞ্চিত করিয়া তুমি কি মুখ পাও! একটা বীণা যেমন নিজে একখণ্ড কাষ্ঠ ও তারের সমষ্টিমাত্র, বাদকের কর-স্পর্শে কেমন বিচিত্র সঙ্গীতে সে মুখরিত হইয়া উঠে, রমেন্দ্রনাথ ভাবিতেfছল সে-ও যে ঠিক তেমনি ! মায়ার বিরহে সে-ও তেমনি অচেতন জডুমাত্র ! এমন কাজল-ঘন মেঘ, এমন সীমাহীন স্বপ্নময়ত,—প্রাণটাকে যে কিছুতেই বাধিয়া রাখা যায় না ? রমেন্দ্রনাথ কাব্য রাখিয়া হাৰ্ম্মোনিয়মের পাশে গিয়া বসিল-গান ধ'রল,— “মম যৌবন-নিকুঞ্জে গাহে পাখী, সখি, জাগো জাগো”— ভূত্য আসিয়া সংবাদ দিল, “প্রিয়বাবু এসেছেন ৷”