পাতা:ভারতী বৈশাখ-আশ্বিন ১৩১৭.djvu/৩৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৪শ বর্ষ, পঞ্চম সংখ্যা । মাথার কাপড়টা একটু টানিয়া মায়া কহিল, “কি ?” রমেন্দ্র ইজি চেয়ারে বসিয়া পড়িল,কহিল, *কলকাতার এ একঘেয়ে জীবন অসহ্য হয়ে পড়েছে । তাই—” মায়া হাসিয়া নিকটে আসিল, কহিল, "তাই, কি করতে হবে, শুনি !” রমেন্দ্ৰ কহিল, "একটু পল্লীবাসের আয়োজন স্থির করেছি—!” মায় বিস্মিতভাবে কহিল, “সে আবার কিগো ?” রমেন্দ্ৰ কহিল, “বজবজ যাবার পথে সন্তোধপুর ষ্টেশন। সেখানে আমার এক বন্ধুর বাগানবাড়ী আছে,—যখন কলেজে পড়তুম, তখন দু-একবার গিয়েছি,—সেখানে চল, দু-চার দিন বাস করে আসা যাক ! শুধু তুমি আর আমি, সঙ্গে আর কেউ নয় ।” মায়া কহিল, “খাওয়া-দাওয়ার উপায় ? কাব্যে ত পেট ভরবে না !” রমেন্দ্র কহিল, “ঐ জন্তই ত তোমাদের কোন উন্নতি হয় না ! যেখানে যাবে, অমনি সাত-শ অক্ষৌহিণী সঙ্গে নিতে হবে । কেন, নিজের দুদিন আর খাওয়ার বন্দোবস্ত করতে পারব না ?” মায়া কহিল, “তার পর বিদেশ-বিভু ই, পাড়া গা হোক, যাই হোকৃ, ফাই-ফরমাসটার জন্তও ত একটা লোক নিয়ে যেতে হবে ।” রমেন্দ্ৰ কহিল, “কোন দরকার নাই— তাদের মালী সেখানে আছে—সব সে ঠিক করে দেবে ।” মায়া কহিল, "বাঃ ! তুমি সব ঠিক করে রসভঙ্গ । ు($ ফেলেছ— আমার জন্ত আর কিছু বাকী রাখনি !” রমেন্দ্র কহিল, “যথেষ্টই রেখেছি— এখন, একটা ফৰ্দ করে ফেল দেখি,এক সপ্তাহ অন্ততঃ থাকব—তার মত ফর্দ করলেই হবে!” মায়ারও মতলবথানা মন্দ লাগিতেছিল না ! তাহা হইলে, কিন্তু বেশ হয় । সেই ছেলেবেল, কবে, মায়। একবার পল্লীগ্রামে, তার পিসিমার বাড়ী গিয়াছিল,—কত বাগান, পুষ্করিণী, খোলা জায়গা, পল্লীরমণীগণের কৌতুহলপূর্ণ দৃষ্টি ! চারিধারে হাসি-আনন্দ যেন ঠিকরিয়া পড়িতেছে ! পরস্পরের মধ্যে কি সে এক গভীর প্রীতির বন্ধন,-কলিকাতায় যাহা একান্ত বিরল ! পার্থীর বিচিত্র কলরবে নিত্য-মুখরিত ছায়া-নিবিড় ঘাটে রমণীগণের স্বচ্ছন্দ নিরাপদ মজলিস, সে যেন আর এক রাজ্য, সম্পূর্ণ এক নুতন জিনিস । অবরোধের লৌহকপাট কোন জায়গায় চাপিয়া ধরে নাই ; দিব্য মুক্ত স্বাধীনতার বিশাল উদার সুখ । কি মুন্দর ! স্বামীস্ট্রীতে মিলিয়া তখনি প্রয়োজনীয় দ্রব্যের তালিকা করিয়া ফেলিল । বিছানা, ষ্টোভ, হরিকেন লণ্ঠন, বাতি, কুইনিন, চায়ের সরঞ্জাম, কণ্ডেন্সড, মিল্ক, সোডা, ণেমনেড, সাবান, অল্প পরিমাণে মসলা, চাল, ডাল, স্থত, লবণ, জলের কুঁজ, গেলাস প্রভৃতি অর্থাৎ যাহা না লইলে নয়, এমন জিনিসমাত্র । থালা প্রভৃতি বহিবার কোন প্রয়োজন নাই, সেখানে কদলীপত্র নিশ্চয়ই প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায় ! প্রিয় শুনিয়া বারণ করিল, “এ সময়ট