পাতা:ভারতী বৈশাখ-আশ্বিন ১৩১৭.djvu/৪১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৪শ বর্ষ, পঞ্চম সংখ্যা । সম্বন্ধে আর নূতন প্রত্যাশা করবার কিছুই থাকে ন!—তখন সে যেন আমাদের কাছে এক রকম ফুরিয়ে আসে। সে রকম অবস্থায় তাকে দিয়ে আমাদের প্রতিদিনের ব্যবহার চলতে পারে কিন্তু উৎসব চলতে পারে ন— কারণ, উৎসব জিনিষটাই হচ্চে নবীনতার উপলব্ধি-তা আমাদের প্রতিদিনের অতীত । উৎসব হচ্চে জীবনের কবিত্ব, যেখানে রস সেই থানেই তার প্রকাশ ! আজ আমি উনপঞ্চাশ বৎসর সম্পূর্ণ করে পঞ্চাশে পড়েছি । কিন্তু আমার সেইদিনের কথা মনে পডুচে যখন আমার জন্মদিন নবীনতার উজ্জ্বলতায় উৎসবের উপযুক্ত ছিল । তখন আমার তরুণ বয়স । প্রভাত হতে না হতে প্রিয়জনের আমাকে কত আনন্দে স্মরণ করিয়ে দিয়েছে, যে, আজ তোমার জন্মদিন । আজ তোমরা যেমন ফুল তুলেছ, ঘর সাজিয়েছ সেই রকম আয়োজনই তখন হয়েছে । আত্মীয়দের সেই আনন্দ উৎসাহের মধ্যে মনুষ্যজন্মের একটি বিশেষ মূল্য সেদিন অনুভব করতুম । যেদিকে সংসারে আমি অসংখ্য বস্থর মধ্যে একজনমাত্র সেদিক থেকে আমার দৃষ্টি ফিরে গিয়ে যেখানে আমি আমিই, যেখানে আমি বিশেষভাবে একমাত্র, সেখানেই আমার দৃষ্টি পড়ত—নিজের গৌরবে সেদিন প্রাতঃকালে হৃদয় বিকশিত হয়ে উঠত । এমনি করে আত্মীয়দের স্নেহ দৃষ্টির পথ বেয়ে নিজের জীবনের দিকে যখন তাকাতুম তখন আমার জীবনের দুরবিস্তৃত ভবিষ্যৎ তার অনাবিষ্কৃত রহস্তলোক থেকে এমন একটি বশি বাজাত যাতে আমার সমস্ত চিত্ত জ্বলে উঠত। বস্তুত জীবন তখন আমার সাম্নেই— জন্মোৎসব ।

) פס\

পিছনে তার অতি অল্পই । জীবনে যেটুকু গোচর ছিল তার চেয়ে অগোচরই ছিল অনেক বেশি। আমার তরুণ বয়সের অল্প কয়েকটি অতীত বৎসরকে গানের ধুয়াটির মত অবলম্বন করে সমস্ত অনাগত ভবিষ্যৎ তার উপরে অনিৰ্ব্বচনীয়ের তান লাগাতে থাকৃত । পথ তখন নির্দিষ্ট হয় নি। নানাদিকে তার শাখাপ্রশাখা ! কোনদিক দিয়ে কোথায় যাব এবং কোথায় গেলে কি পাব তার অধিকাংশই কল্পনার মধ্যে ছিল। এইজষ্ঠ প্রতিবৎসর জন্মদিনে জীবনের সেই অনির্দেগু অসীম প্রত্যাশায় চিত্ত বিশেষ ভাবে জাগ্ৰত হয়ে উঠত । ঝরনা যখন প্রথম জেগে ওঠে, নদী যখন প্রথম চলতে অরম্ভ করে তখন নিজের সুবিধার পথ বের করতে তাকে নানা দিকে নানা গতি পরিবর্তন করতে হয়। অবশেষে বাপরি দ্বার সীমাবদ্ধ হয়ে যখন তার পথ মুনির্দিষ্ট হয় তখন নুতন পথের সন্ধান তার বন্ধ হয়ে যায়। তখন নিজের খনিন্ত পথকে অতিক্রম করাই তার পক্ষে দুঃসাধ্য ಶ್ರ(g 8ಡೆ | আমার ও জীবনের ধারা যখন ঘাত প্রতিঘাতের মাঝখাল দিয়ে আপনার পথটি তৈরি করে নিলে, তপন বর্ষার বস্তার বেগও সেই পথেই স্ফীত হয়ে বইতে লাগল এবং গ্রীষ্মের রিক্ত তাও সেই পথেই সঙ্কুচিত হয়ে চলতে থাকৃল। তখন নিজের জীবনকে বারম্বার আর নুতন করে আলোচনা করবার দরকার রইল না । এই জষ্ঠে তখন থেকে জন্মদিন আর কোনে নুতন অtশার স্বরে বাজতে থাকৃল না। সেইজষ্ঠে জন্মদিনের