পাতা:ভারতী বৈশাখ-আশ্বিন ১৩১৭.djvu/৫৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৪শ বর্ষ, ষষ্ঠ সংখ্যা । চয়ন—মুর্শিদাবাদের প্রাচীন কাহিনী । &b') মুর্শিদাবাদের প্রাচীন কাহিনী। ১৭৪৯ খৃষ্টাব্দে আলিবন্দী খ" মুঙ্গের যাত্রা করিলেন । পথিমধ্যে বিশ্বাসঘাতক আতাউল্লার কয়েকখানি পত্র তাছার হস্তগত হইল। এই সকল পত্রে আতাউল্লা বিদ্রোহীগণকে নিৰ্ভয়ে রাজশক্তির বিরুদ্ধে দণ্ডায়মান হইতে পরামর্শ দিয়া পরিশিষ্ট্রে অশ্বাস দিয়াছেন যে তাছাদের অভীষ্টসাধনে কোণ এ কার বাধা বা বিপদ উপস্থিত হইলে তিনি তাহদিগকে সাধ্যমত সাহায্য করিতে ত্রুটি কfরবেন না । মুঙ্গের হইতে নবাব একেবারে বঢ়ে যাত্র করিলেন। এই বঢ়েই বিদ্রোহীরা তাহদের প্রধান আড়ড়া স্থাপিত করিয়াছিল। বিপৎকালে মহারাষ্ট্রেরা তাহাদিগকে সাহায্য করিতে প্রতিশ্রুত ছিল । সেই জষ্ঠ তাছার তথায় প্রতিক্ষণেই মহারাষ্ট্রের আগমন প্রতীক্ষা করিতেছিল। শমণীর খ"। ইতিপূর্বে একদিন হৰিবকে ভোজনে নিমন্ত্রণ করিয়া, মহারাষ্ট্রদিগের প্রতিজ্ঞা রক্ষার প্রতিভূ স্বরূপ তাহাকে স্বকীর শিবিরে বন্দী করিয়া রাখিয়াছিল । শত্রু লক্ষের মধ্যে এইরূপ বিরোধ ও মনোমালিন্তে নবাবের আরও স্বfবধাই হইল । যুদ্ধের প্রারস্তেই সর্দার খ" নিহত হইলেন এবং তাহার সৈন্যদল তৎক্ষণাৎ ছত্রভঙ্গ হইয়। পৃষ্ঠ প্রদর্শন করিল । দুৰ্দ্দান্ত শমশারের সহিত মুর্শিদ।-- ৰাদস্থ হবিব বেগ নামে এক বক্তি দ্বন্দযুদ্ধে প্রবৃত্ত হইল। তৎকালে মুর্শিদাবাদের লোকের অসিক্রীড়ায় নিপুণতার জন্য প্রসিদ্ধ ছিল । হবিব তাহার শ্রেষ্ঠ কৌশলের বলে অবিলম্বে শমশীরের মস্তক দে:চু্যত করিয়া নবাবের পদতলে রাখিয়া দিল । বিদ্রোহী আফগানদিগকে প্রথমে পরাজিত করিয়া পরে মহারাষ্ট্রদিগকে শাসিত করাই নবাবের উদেশ্বা ছিল। শামশীর ও সর্দারের মৃত্যুতে তাহদের সৈন্তগণ রণক্ষেত্র পরিত্যাগ করিয়া পলায়ন করিল। অগত্যা মহারাষ্ট্রেরাও যুদ্ধস্থল পরিত্যাগ করিয়া মেদিনীপুর অভিমুখে পলায়ন করিগ। পরিত্যক্ত শক্রশিবিরে প্রবেশ করিয়াই আলিবর্দী তাহার কন্যাকে আলিঙ্গন করিলেন। প্রিয়তম কন্যাকে ফিরিয়া পাইয়া তিনি ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দান করিলেন ও দরিদ্রদিগের মধ্যে প্রভূত অর্থ বিতরিত করিলেন । এইবার জয়গৰ্ব্বে পাটনা নগরে প্রবেশ করিয়া তিনি তাহার বালক দ্ৰৌহিত্র সিরাজ উদ্দৌলাকে তদীয় পিতৃপদে অধিষ্ঠিত করিলেন। সিরাজ বঙ্গের শাসনকৰ্ত্তার পদে নিযুক্ত হইলেন । সিরাজের অনভিজ্ঞ তাহেতু নবাব রাজ। জানকী রামকে সহকারী শাসনকৰ্ত্তার পদে নিযুক্ত করিলেন। আতাউল্লীর অতীত রাজসেবী স্মরণ করিয়া নবাব তাহকে অপর কোন শাস্তি না দিয়া কৰ্ম্মচু্যত করিলেন এবং তাহার সঞ্চিত অতুল সম্পত্তি সঙ্গে লইয়। রাজধানী ত্যাগ করিতে আদেশ করিলেন । আলিবদর অন্তর এত উদার ও মহৎ ছিল যে তাছার কোন কৰ্ম্মচারী বিদ্রোহী বা বিশ্বাসঘাতক হইয়াছে বলিয়। তিনি তtহার পরিবারবর্গের উপর কোন প্রকার অত্যাচার কর। নিতান্ত হানত বলিয়া জ্ঞান করিতেন । সেই জন্য তিনি বিদ্রোহী আফগান সেনাপতির পরিবারবর্গকে তাহদের শোকে সহানুভূতি জানাইয়া এক পত্র লিখিলেণ এবং বন্ধুত্বের নিদর্শন স্বরূপ অর্থ ও উপঢৌকনাদি পঠাইয় দিলেন । এমণ কি তিনি বিশ্বাসঘাতক মির হfববের পত্নীকে অর্থ ও অন্ত:স্ত উপহার প্রদান করিয়া স্বকীয় ব্যয়ে তাহাকে তাহার স্বামীর নিকট উড়িষ্যতে পাঠাইয়া দিলেন। এই বৎসরেই জামুঞ্জি ভোসলে মাতৃবিয়োগ হওয়াতে মেদিনীপুর ত্যাগ করিয়া বেরার যাত্রা করিলেন । ১৭৪৯ খৃষ্টাব্দেই অক্লান্ত বীর আলিবন্দী পুনরায় রণসজ্জায় সজ্জিত হইলেন। এবার তিনি মহারাষ্ট্রদিগকে উড়িষ্যা হইতে চিরদিনের জন্য বিতাড়িত করিতে বদ্ধপরিকল্প হইয়াছিলেন । কিন্তু কৌশল্পী মহারাষ্ট্র দগের নিকট ব্যর্থ-মনোরথ হইয়া তিনি এই লুণ্ঠনকারদিগের হস্ত হইতে রাজারক্ষা করিবার জন্ত