পাতা:ভারতী বৈশাখ-আশ্বিন ১৩১৭.djvu/৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

αν ভারতী । কিরূপ প্রাণ দিয়া ভাল বাসিতেছি, তাহ ত তোমার অবিদিত নাই। পুষ্প যেমন স্বৰ্য্যকিরণকে ভালবাসে, যোদ্ধা যেমন গৌরবকে ভালবাসে, ভক্ত যেমন তার আরাধ্য দেবতাকে ভালবাসে, আমিও যে এতদিন তোমাকে তেমনি ভালবাসিয়াছি ফিলিপ * “একের প্রেম যদি অপরের প্রাণে প্রেমসঞ্চার করা সম্ভব হইত, তাহা হইলে এতদিনে আমার তোমাকে ভালবাসিতে আরম্ভ করা উচিত ছিল সন্দেহ নাই। কিন্তু কৈ আমি তোমাকে অজিও ত ভালবাসিতে পারিলাম ন, বোধ হয় কখনও পারিব না ; তোমার এই অনুসরণ আমাকে যন্ত্রণ দেয় মাত্র ।” কথাগুলি যেমন নিষ্ঠুর, তাহ প্রকাশের স্বরও তেমনি কঠোর। অপর কাগকে ও বলিলে, এইখানেই তাহার সকল তাশ ভরস চূর্ণ হইত। কিন্তু চসারের প্রেমময় হৃদয় অসীম অধাবসায়পূর্ণ। তাছার প্রাণ ব্যর্থতাকে স্বীকার করিতে বা আশাকে চিরদিনের জন্য বিদায় দিতে কোনমতেই প্রস্তুত নহে । চলার জিজ্ঞাসা করিলেন—“কিন্তু ফিলিপ, তুমি আর কাহাকেও ভালবাস না ত’ ?” সুন্দরী প্রথমে একটু ক্রুদ্ধস্বরে বলিয়া উঠিলেন—“তুমি কি আমার গুরু যে তোমার নিকট সে কথা প্রকাশ করিতে হইবে ?” পরক্ষণেই যেন আপনার কঠোরতায় ঈষৎ অনুতপ্ত হইয়। বলিলেন—“কলহে আবগুক নাই, আমাদের চিরদিনের সদ্ভাব যেন সমভাবেই থাকে। আমি আর কাছাকেও ভালবাসি না এবং ভবিষ্যতে বাসিবও না তাহ নিশ্চিৎ। বিধাতা আমাকে ভালবাসার বৈশাখ, ১৩১৭ শক্তি দিয়া স্বজন করেন নাই । আজ তবে এখন বিদায় ; দেখিও রাজসভা মধ্যে যেন আমাকে তার বিরক্ত বা লজ্জিত করিও না ।” ( R ) রাজ প্রাসাদের চতুৰ্দ্দিকেই চাঞ্চল্য ও কোলাহল । অর্থ, যশ, বা সম্মান লাভের জন্ত সকলেই ব্যগ্র । সেই কোলাহলের মধ্যে জিয়ফ্রে চসার প্রাসাদ প্রাচীরে হেলিয়। নীরবে দাড়াইয়া আছেন। নিকটে ও দূরে ভেরী নিনাদ উঠিতেছে, অদূরে কেহ উচ্চ হস্ত করিতেছে, কেহ আদেশ করিতেছে, কেহ বা অশ্ব লষ্টয়া সবেগে অগ্রসর হইতেছে । চতুর্দিকে সৈনিকগণ, যোদ্ধগণ ও মহিলাগণ যাতায়াত করিতেছে । চসার ধ্যানরত প্রতিমামুৰ্ত্তির স্থায় সেই প্রাসাদের এক নিভৃত পাশ্বে দণ্ডায়মান রহিয়াছেন। আজ একটু শান্তি লাভের জন্তই তিনি এই জনহীন স্থানে অসিয়া আশ্রয় লইয়াছিলেন। চতুৰ্দ্দিকের এই অশান্তু কোলাহল আজ র্তাহার অন্তরকে কোন মতেই বিক্ষিপ্ত করিতে পারিতেছে না । আজ ইংলণ্ডের প্রথম স্বভাব কবির সম্মুখে প্রকৃতি তাহার মনোহর সৌন্দর্য্যশোভা লষ্টয়া অবতীর্ণ । মুগ্ধ কবির নয়ন সেই সৌন্দর্য্য রসপনে এতই আত্মহারা যে র্তাহার শ্রবণ পর্য্যন্ত আজ বধির । এমন সময়ে পশ্চাতে একজন বলিয়; উঠিল—“ত হ’লে কবিবর, তোমার প্রেমপীড়া এখনওঁ তোমায় ছাড়ে নি ?” কবিবর পশ্চাতে ফিরিয়া দেখিলেন বক্ত স্বয়ং রাজপুত্র I.