ዛ8 ভারতী । বলিল—“আমি যে এইমাত্র তার জন্তে বুকের রক্ত দিয়ে দেবতার কাছ থেকে বর ভিক্ষা করে এনেচি !" কানের পাশে আবার কে বলিল— “বেশ তো ! বর তো সে পেয়েছে!” —“কী বর পেয়েছেন ?” —“তার সৰ্ব্বাঙ্গীণ মঙ্গল ;—তোর সহিত তার অনন্ত বিচ্ছেদ ।” রমণী স্তম্ভিত হইয় গেল ! বৈশাখ, ১৩১৭ তরণী তখন অগাধ সমুদ্রের মধ্যে কোথায় নিরুদ্দেশ হইয়া গেছে ! আবার শব্দ উঠিল—“কেমন্, তুই তে৷ স্বর্থী ?” রমণী ধীরে ধীরে কহিল—“হা, সুখী !” চারিদিক তখন স্তব্ধ হইয়া গেল, আকাশে বাতাসে করুণ রাগিণী বাজিয়া উঠিল। রমণীর চরণ ঘেরিয়া সমুদ্রের চঞ্চল জল ছল ছল করিয়া কাদিয়া ফিরিতে লাগিল ! শ্ৰীমণিলাল গঙ্গোপাধ্যায়। পোষ্যপুত্র। (ধারাবাহিক উপন্যাস) ( গত ১৩১৬ সালের বৈশাখ হইতে আরম্ভ ) ( २७ ) শাস্তির বিবাহের মাসখানেক পরে স্ত্রীকে তাহার বাপের বাড়ি পাঠাইয়৷ যোগেন্দ্র মাদুরায় ফিরিয়া আসিল । এখানে আসিয়৷ সংবাদ লইয়া জানিল মিঃ রায় ও ফিরিয়াছেন। তিনি এবার আসিয়া অবধি বড় একটা কাজকৰ্ম্ম দেখেন না, একজন ম্যানেজার রাখা হইয়াছে, মধ্যে মধ্যে তাছাকে বুঝাইয়া শিখাইয়া দিতে অফিসে যাইতে হয় তা ভিন্ন বাকি সময়টা নিজের সেই নির্জন বাসাটিতেই থাকেন। যোগেন্দ্রের চার্জ লইতে তখনো একদিন দেরি ছিল। সে তৎক্ষণাৎ জুতা ও উড়ানি পরিয়া বাহির হইয় গেল। সম্মুখেই মালাটা ফুল গাছগুলায় ঝারি করিয়া জল দিতেছিল তাহাকে জিজ্ঞাসা করিল “সাহেব বাড়ি আছেন ?” উত্তর পাইল বাবু ঘরেই আছেন।” যোগেন্দ্র সম্মুখের হলে কাহাকেও না দেখিয়া একেবারে গৃহস্বামীর শয়নকক্ষে প্রবেশ করিল। সে ঘরে প্রথম সন্ধ্যাতেই একটা অনুজ্জ্বল প্রদীপ জালাইয়া মেঝের উপর আসন পাড়িয়া বসিয়া নীরদকুমার সম্মুখে এক কাঠের ছোট চৌকির উপর থেরো বাধীন এক পথি পুলিয়া নিবিষ্টচিত্তে পাঠ করিতেছিল, যোগেন্দ্রের সশব্দ প্রবেশ ও জানিতে পারিল না । যোগেন্দ্র একবার ঘরথfনার চারিদিকে আশ্চৰ্য্য দৃষ্টি নিক্ষেপ করিল, সে ঘরখানা প্রতিমাবর্জিত চণ্ডিমণ্ডপের মতন গা গা করিতেছে। পরে গৃহস্বামীর নিকটে গিয়া বলিয়া উঠিল “জিনিপত্রগুলো সব গেল কোথায় ? আলোটার এমন দশাই বা কেন ? সম্বোধিত ব্যক্তি একটু বিস্ময়ের সহিত মুখ তুলিয়া জিজ্ঞাসা করিল “কি দশ ?” “চরম দশা আর কি, ল্যাম্পট বুঝি চাকররা ভেঙ্গে ফেলেছে ? বেটাদের জালায় কিছু তো টিকৃতে পারে না। তা যাহোক
পাতা:ভারতী বৈশাখ-আশ্বিন ১৩১৭.djvu/৯১
অবয়ব