পাতা:ভারতী বৈশাখ-আশ্বিন ১৩২১.djvu/৩৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8 সে কতক্ষণের পর, রুষসৈনিক হাত দুখানি মুাথার উপর তুলে, আকাশের দিকে মুখ করে গুলেন। হেক্টর দেখতে না পেলেও, বুঝতে পারলেন, তার চোক দুটা খোলা রয়েছে । এতক্ষণের পর তার সংজ্ঞা হয়েছে । , হেক্টর, চীৎকার করে প্রথমে ফরাসী তার পর রুষ ভাষায় জিজ্ঞাসা করলেন - ওখানে ও কে ? কে গো তুমি কে ? এবারেও কোন উত্তর এল না, রুষ-সৈনিক আবার একটু নড়ে চড়ে স্থির হলেন, হেক্টর আবিষ্টভাবে তাকে দেখতে লাগলেন ; তার নিশ্বাস প্রশ্বাস কষ্টকর হয়ে উঠল। যাকে দেখেছিলেন সে ক্রমে মাটির দিকে দৃষ্টি রেখে উঠে বস্ল— সেই ভাবেই স্থির হয়ে রইল ;–হেক্টর তার মুখ দেখতে পেলেন না, কেন না সে তার দিকে পিঠ ফিরে বসে ছিল। হেক্টর চীৎকরে করে বল্লেন, আরে জন্তু, তুই যদি রাজকুমার বোরিস হ’স, তা হ’লে আমার দিকে মুখ করে ফিরে বোস। - যে ব্যক্তির উদ্দেশে কথাগুলি বলা হ’ল, তার নীলবর্ণ বনাতে সোনালি কাজকরা পোষাক ; বৃষ্টি বরফ পড়ে জরিতে কাণী ধরেছে, হেক্টরের দিকে পিঠ ফিরে বসে ছিলেন ; মাথা নীচু, পিঠ ফুয়ে পড়েছিল, তবুও সেই আহুত পৃষ্ঠথানির ব্যবধান যেন হেক্টরের চোখের সন্মুখে আকাশ ও পৃথিবীর সমস্ত আলোক ঢাকা দিয়ে রেখেছিল। ভ্র কুঞ্চিত করে, চক্ষে অগ্নিস্ফুলিঙ্গ সঞ্চয় কবে, মুখের মধ্যে গোফ টেনে নিয়ে, চিবতে চিবতে, হেক্টর আপন পিস্তল খুঁজতে লাগলেনকোথায় পিস্তল,—নেই । শক্রর দেখা পাব মাত্রই এক গুলিতে তাকে মারতে পারলেন ভারতী শ্রাবণ, ১৩২১ না, এই বড় আপশেষ হ’ল ; তবুও এ কাজ যে করবেন এমন কথা পূৰ্ব্বে কখনো ভাবেন নি। পিস্তল গেছে, তলওয়ারখানা তখনও ছিল, ভাঙ্গ কোমরবন্ধ হতে সেখানি আস্তে আস্তে বা’র করলেন, ধার পরীক্ষা করে দেখলেন—তলওয়ারের মুখ পড়ে গেছে, চারি দিকে মরচে ধরেচে— দেখে শুনে খুলে সেখানি পাশে রাখলেন । হঠাৎ আবার বাতাস আরম্ভ হল-চারিদিক্‌ হ’তে গুড়ে বরফ ঝেটিয়ে নিয়ে ছড়াতে লাগল, হেক্টরের চোখে মুখে সেই তুষার ধুলি প্রবেশ করে ; তাকে সন্ধপ্রায় করে দিলে, সৰ্ব্বাঙ্গে এমি জোরে আঘাত করলে, যে, তিনি সহসা একেবারে সোজা হয়ে উঠে বসলেন, আপন পায়ের দিকে চেয়ে রইলেন-সন্মুখের জলস্রাত, উদ্ধে নীলআকাশের দিকে দেখলেন—তার পরে আপনার বঁাদিকে চাইলেন-সেই থানেই দৃষ্টি নিবদ্ধ হ’য়ে রইল—কতদিন কোন যুগ যুগান্তর পরে, হেক্টর আবে নে প্রেভষ্ট আর প্রিন্স বোরিস একে অপরকে দেখলেন । সে জমাট বরফক্ষেত্রে তারা দুজন ভিন্ন আর কেহই হয়ত বেঁচে ছিল না। হেক্টরই প্রথম কথা কইলেন—“আমি কেবলি তোমাকে খুঁজে বেড়িয়েছি”। _. বোরিস উত্তর করলেন—“আমি ত কখনো পালিয়ে বেড়াইনি। জমাট বরফ তো ভেঙ্গে গেছে, আমরা হ্রদের জলের উপর ভাসছি”। “তাইত দেখছি একই আশ্রয়ে তোমার আর আমার একটুখানি বিশ্রাম স্থানের এখনে অভাব হয়নি। “হঁ্যা এখনও কিছুক্ষণের জন্ত আছে বটে।" হেক্টর চুপ করলেন, শক্র ও তার মধ্যে কতখানি