ধরিবার পটুতা তাহার অপেক্ষাকৃত কম; কিন্তু তাহার যাহা আছে, তাহা হইভেছে একটা গভীরতর, নিবিড়তর ধ্যানপ্রতিষ্ঠ স্থৈর্য্য। ভারত যে কাজ করে, তাহা করিতে সে চায় ধীরে সুস্থে বিচার বিবেচনা করিতে করিতে ইতস্ততঃ করিতে করিতে। তাহার কাজ সময় সাপেক্ষ; কারণ, জিনিষকে সে আগে লইয়া চলে নিজের গভীরত্বে এবং অন্তরের এই অন্তরতম প্রদেশ—এই ‘গুহাগতং গহ্বরেষ্ঠং’—হইতে আরম্ভ করিয়া ক্রমে তবে বাহিরের জীবনের যেখানে যাহা পরিবর্ত্তন করিবার, পুনর্গঠন করিবার, তাহা সে করে। যতক্ষণ পর্য্যন্ত বাহিরের দেওয়া জিনিষকে লইয়া সে এই ভাবে আপনার মধ্যে না ডুবিয়া যাইতে পারিয়াছে, তাহাকে নিজের অন্তর্ভূক্ত, অঙ্গীভূত না করিয়া লইতে পারিয়াছে, যে শক্তি জিনিষকে আবার নূতন করিয়া গড়িয়া তুলিবে, তাহা যতক্ষণ পর্য্যন্ত ভিতরে ভিতরে সে প্রস্তুত না করিয়া ধরিতে পারিয়াছে, ততক্ষণ পর্য্যন্ত যে নূতন পথ সে ধরিয়াছে, তাহাতে স্বচ্ছন্দগতিতে অগ্রসর হইয়া চলিতে পারিবে না। ভারতের নবযাত্রা বহুমুখী, জটিল; এই জন্যেই যে সব সমস্যা তাহার সম্মুখে উঠিতেছে তাহাদের মীমাংসা এমন দুরূহ।
পাতা:ভারতের নবজন্ম - অরবিন্দ ঘোষ.pdf/৪৯
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভারতের নবজন্ম
৪৭