হইল সনাতন ধর্ম্ম। এই সনাতন ধর্ম্মেরই নূতন প্রয়োগ, নূতন ধারা আজ সে দেখাইতেছে। প্রাচীনতর শিল্পে যতখানি ছিল রূপকের, পৌরাণিক কথাকাহিনীর আধিপত্য, ভাবের বা তত্ত্বের বৃহৎ ব্যঞ্জনা, আধুনিক শিল্পে তাহা নাই; আধুনিক শিল্প দিতে চাহিতেছে আভাসে ইঙ্গিতে অতি সন্তর্পণে একটা নিবিড় সাক্ষাৎ সূক্ষ্ম রূপায়ন। এই শিল্প বাস্তবিকই একটা নূতন সৃষ্টি; আশা করা যায়, বাঙ্গলা এই যে পথ খুলিয়া দিয়াছে, তাহাতে ভারতের অন্যান্য প্রদেশ উঠিয়া আসিয়া চলিতে থাকিবে। শুধু তাই নয়, কলিকাতার নূতন শিল্পীমণ্ডলী শিল্পের দিয়াছে যে বিশেষ ধরণধারণ, তাহা বাঙ্গলার প্রাণেরই অন্তরঙ্গ বিকাশ; সুতরাং অন্যান্য স্থানের নূতন শিল্পী আরও নূতন ধরণধারণে আপনাকে প্রকাশ করিয়া চলিতেছেন, ভিন্ন ভিন্ন পথ খুলিয়া ধরিতেছেন, এরকমও আমরা অচিরে দেখিতে পারি। কিন্তু ভারতের মহত্ত্ব এইখানে যে, একদিকে তাহার আছে যেমন প্রদেশগত শিক্ষাদীক্ষার বিপুল বৈচিত্র্য, তেমনি অন্যদিকে সে সমস্তকে ধরিয়া আছে তাহার একটা নিবিড় অখণ্ড দেশগত ঐক্য। ভারতশিল্পের নব অভ্যুত্থানে ভারতের এই প্রকৃতিটিই যথাযথ প্রতিফলিত হইয়া উঠিবার সম্ভাবনা।
পাতা:ভারতের নবজন্ম - অরবিন্দ ঘোষ.pdf/৭৮
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভারতের নবজন্ম
৭৬