পাতা:ভারতের রাষ্ট্রনীতিক প্রতিভা - অরবিন্দ ঘোষ (১৯২৫).pdf/৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভারতীয় রাষ্ট্রবিকাশের ধারা
৫৭

ও বিদ্বান্ ব্যক্তির আবির্ভাব হয়। ব্দে ও উপনিষদের অধ্যয়ন প্রধানতঃ তাহাদের হস্তেই চলিয়া যায়, যদিও উচ্চ তিন বর্ণের পক্ষেই সকল সময়ে উহা খোলা ছিল, শূদ্রগণের পক্ষে উহা নিয়মমত নিষিদ্ধ ছিল। কিন্তু বাস্তবিকপক্ষে পর্যয়ায়ক্রমে বহু ধর্ম্মান্দোলনের ফলে পরবর্ত্তী কাল পর্য্যন্তও প্রাচীন যুগের সেই স্বাধীনতা মূলতঃ বজায় ছিল, সেই সব ধর্ম্মান্দোলন উচ্চতম অধ্যাত্মজ্ঞান ও সাধনার সুযোগ লোকের দ্বারে দ্বারে আনিয়া দিয়াছিল, এবং যেমন আদিকালে আমরা দেখিতে পাই যে, বৈদিক ও বৈদান্তিক ঋষিগণের উদ্ভব সকল শ্রেণী হইতেই হইয়াছে, তেমনই শেষ পর্য্যন্ত সমাজের সকল স্তর হইতে, নিম্নতম শূদ্রদের মধ্য হইতে, এমন কি, ঘৃণিত ও পদদলিত অস্পৃশ্যদের মধ্য হইতেও যোগী, ঋষি অধ্যাত্মচিন্তাসম্পন্ন ব্যক্তি, ধর্ম্মসংস্কারক, ধার্ম্মিক, কবি ও গায়কের আবির্ভাব হইয়াছে, এবং তাহারা গতানুগতিক শাস্ত্র ও বিদ্যার অধিকারী না হইলেও তাহারাই যে জীবন্ত আধ্যাত্মিকতা ও জ্ঞানের প্রকৃত উৎস, সে বিষয়ে সন্দেহ নাই।

 চারি বর্ণ হইতে কালক্রমে দৃঢ়বদ্ধ উচ্চ-নীচ সামাজিক শ্রেণীবিভাগের আবির্ভাব হয়, কিন্তু পতিতদিগকে বাদ দিলে, প্রত্যেক শ্রেণীরই ছিল এক বিশেষপ্রকারের অধ্যাত্মজীবন ও উপযোগিতা, বিশেষপ্রকারের সামাজিক