পাতা:ভারত-প্রতিভা (প্রথম খণ্ড) - সতীশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়.pdf/১৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

30 ভারত-প্রতিভা । দীর্ঘকাল পৰ্যটনের ফলে স্বামীজী অনেক অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করিয়া আসিয়াছিলেন। তিনি মঠের ভ্রাতাদিগকে বুঝাইয়া দিলেন যে, রামকৃষ্ণদেবের প্রভাবে বিচ্ছিন্ন ভারতবর্ষ আবার একসূত্রে গ্রথিত হইবে। কিছুদিন । মঠের ভ্রাতাদিগকে শিক্ষাদানের পর তিনি পুনরায় দেশপৰ্য্যটনে বহির্গত হন। এ যাত্ৰা সৰ্বপ্রথম তিনি গাজীপুরে গিয়া পাওহারী বাবা নামক জনৈক মহাশক্তিশালী জ্ঞানী পুরুষের সহিত সাক্ষাতের অভিলাষ করিলেন। এই মহাপুরুষ উচ্চপ্রাচীরবেষ্টিত উদ্যানমধ্যস্থ গুহার মধ্যে অবস্থান করিতেন। তন্মধ্যে সাধারণের প্রবেশের কোনও উপায় ছিল না। অনেক চেষ্টাসত্ত্বেও তঁহার দেখা না পাইয়া সে যাত্ৰা স্বামীজী বরাহনগরে ফিরিয়া আসিলেন এবং কিছুদিন পরে পুনরায় পাওহারী বাবার সহিত সাক্ষাতের জন্য গাজীপুর গমন করেন । এবার যোগীর সহিত র্তাহার সাক্ষাৎ ও আলাপ হইল। রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবকে পাওহারী বাবা ভগবান বলিয়া বিশ্বাস করেন জানিতে পারিয়া স্বামীজী তঁহার প্রতি অধিকতর আকৃষ্ট হন এবং পাওহারীবাবার নিকট দীক্ষা-গ্রহণের সংকল্প করেন ; কিন্তু পরিশেষে সে সংকল্প পরিত্যক্ত হয় । দীক্ষা গ্ৰহণ করিতে যাইবার পূৰ্ব্বে তিনি পরমহংসদেবের মূৰ্ত্তি দেখিতে পান। তঁহার বেদনা-ব্যঞ্জক ছল-ছল দৃষ্টি দেখিয়া স্বামীজীর মনে অত্যন্ত আত্মগ্লানি জন্মে। ১৮৯০ খৃষ্টাব্দে স্বামীজী পুনরায় দেশভ্রমণে যাত্রা করিলেন। এবার সংকল্প, আর তিনি গৃহে ফিরিয়া আসিবেন না। বস্তুতঃ এ যাত্রায় সাত । বৎসরের মধ্যে তিনি আর মঠে ফিরিয়া আসেন নাই। ইতিমধ্যে বরাহনগর হইতে মঠ আলমবাজারে উঠাইয়া লওয়া হইয়াছিল। স্বামীজী হিমালয়-রাজ্যে ভ্ৰমণ করিবেন বলিয়া এবার বাহির হইয়াছিলেন ।