পাতা:ভারত-প্রতিভা (প্রথম খণ্ড) - সতীশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়.pdf/১৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্বামী বিবেকানন্দ । 38) দেখিলেন, ইহাতে সুবিধা আছে। বক্তৃতা-কোম্পানী তাহাকে যে অর্থ দিবেন, উহা দ্বারা তিনি ভারতে ধৰ্ম্ম ও লোকহিতকর অনুষ্ঠানেও অর্থসাহায্য করিতে পরিবেন। উক্ত কোম্পানীর প্রস্তাবে সম্মত হইয়া তিনি আমেরিকার সর্বত্ৰ গমন করিতে লাগিলেন । এই সময়ে তিনি যে সকল বক্তৃতা দিয়াছিলেন, তাহার সারাংশ ও ভ্রমণবৃত্তান্ত এখন দুস্তপ্ৰাপ্য। তবে এই সকল বক্তৃতা দ্বারা তিনি আমেরিকাবাসীর মন হইতে ভারতবাসীরা অসভা এবং ভারতবর্ষ সম্বন্ধে ভ্ৰান্ত ধারণা দূরীভূত করিতে পারিয়াছিলেন । বক্তৃতা করিবার সময় অনেকে অনেক প্রকার স্বামীজীকে পরীক্ষা করিয়াছিল। একবার একস্থলে নিমন্ত্রিত হইয়া বক্তৃতা করিবার সময় তিনি দেখিলেন যে, মধ্যস্থলে একটি কাঠের গামলা উপুড় করিয়া রাখা হইয়াছে। স্বামীজ অমানবদনে তাহার উপর দাড়াইয়া বক্তৃতা আরম্ভ করিয়া দিলেন। সহসা বন্দুকের ভীষণ শব্দ হইল। একটা গুলী তাহার কাণের পাশ দিয়া চলিয়া গেল। স্বামীজীর বক্তৃতায় কোন বাধা জন্মিল না। তিনি অবিচলিতভাবে বক্তব্য বলিয়া যাইতে লাগিলেন। বক্তৃতা শেষে শ্রোতৃগণ বলিল, পরীক্ষার জন্যই তাহারা ঐ রূপ ব্যবস্থা করিয়াছিল ; এজন্য তাহারা দুঃখিতান্তকরণে ক্ষমা চাহিতেছে ; বক্তৃতা কোম্পানীর অধ্যাক্ষের স্বামীজীর সাহায্যে যথেষ্ট অর্থে পাৰ্জন করিতে লাগিলেন, অথচ তঁহাকে যৎসামান্য মাত্র প্রদত্ত হইত। এক এক দিন তঁাহারা সাড়ে সাত হাজার টাকা উপাৰ্জন করিয়া মাত্র তাঁহাকে ছয় শত টাকা দিতেন। এইরূপ ব্যবহারে বিরক্ত হুইয়া স্বামীজী পয়সা লইয়া । বক্তৃতা দিবার অভিপ্রায় ত্যাগ করিলেন, আর উক্ত কোম্পানীর সহিত কোনও সংস্রব রাখিলেন না । ዖ ነ