পাতা:ভারত-প্রতিভা (প্রথম খণ্ড) - সতীশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়.pdf/২৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

२७५ ভারত-প্ৰতিভা । দিয়া রামতনু মাসিক ১৬২ টাকা বৃত্তিলাভ করেন। বৃত্তি পাইবার পর যুগল কনিষ্ঠ সহোদর, রাধাবিলাস ও কালীচরণকে রামতনু কলিকাতায় আনিয়া লেখাপড়া শিখাইবার জন্য বাগ্র হইয়া উঠিলেন। সে সময় কলিকাতা থাকার ব্যয় বৰ্ত্তমানের মত অসম্ভবরুপ অধিক ছিল না বটে ; কিন্তু তথাপি মাসিক ষোল মুদ্রায় তিনজনের ব্যয় নির্বাহ হওয়া দুর্ঘট ছিল। যাহা হউক, রামতনু নিরুৎসাহ হইলেন না। সেই স্বল্প আয়ের দ্বারাই তিনজনের জীবনযাত্ৰা নির্বাহ হইতে লাগিল। রন্ধনের জন্য পাচক, অথবা অন্যান্য কাৰ্য্যা সম্পাদনের নিমিত্ত তৃতা অবশ্যই তঁহাদের রাখিবার সামর্থ্য ছিল না। তিন ভ্ৰাতাই রন্ধনাদি যাবতীয় কাৰ্য্য নিৰ্বাহ করিতেন। বাসনামাজা, ঘর ঝাঁট দেওয়া, বাজার করা প্রভৃতি সকল কাৰ্য্যই উর্তাহাদিগকে করিতে হইত। দুইবেল অন্ন পাক করিয়া আহার করিতেন। জলযোগের অর্থ জুটিত না । অধিকাংশকালই নগ্নপদে স্কুলে যাইতে হইত। বর্ষাকালে ছাতি পৰ্যন্ত সংগ্ৰহ করা দুঃসাধ্য ব্যাপার ছিল। জ্যেষ্ঠভ্রাতা কেশবচন্দ্র ইদানীং কনিষ্ঠদিগের কোনও প্রকার সাহায্য করিতে পারিতেন না । টাকায় কুলাইত না বলিয়াই পারিতেন না। রামতনু যে কিরূপ কষ্টে ছোট দুইটি ভাইকে লইয়া কলিকাতার খরচ নিৰ্বাহ করিতেন, তাত বৰ্ণনাতীত । একবার তিনি “তঁহার সহৃদয় বন্ধু কৃষ্ণমোহন বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিকট কিছু অর্থ ঋণ করিয়াছিলেন। মহাত্মা ডেভিড হেয়ারের নিকটও তেঁহাকে অর্থ সাহায্য প্রার্থনা করিতে হইয়াছিল। হেয়ার সাহেব অতি সংগোপনে তঁহাকে টাকা দিয়াছিলেন ; কিন্তু এ কথা প্ৰকাশ করিতে নিষেধ করিয়া দিয়াছিলেন। সাহেব, যতদিন জীবিত ছিলেন, রামতনু ঘূণাক্ষরেণ্ড । সে কথা কাহারও নিকট প্রকাশ করেন নাই।