পাতা:ভারত-প্রতিভা (প্রথম খণ্ড) - সতীশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়.pdf/২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

》$ ভারত-প্ৰতিভা বাল্যে রামমোহন পরম হিন্দু ছিলেন-প্ৰত্যহ শ্ৰীমদ্ভাগবতের কিয়দংশ অধ্যয়ন করিতেন। অভিনিবেশসহকারে বিবিধ শাস্ত্রানুশীলন ও গবেষণা করিয়া তঁহার পৌত্তলিকতার প্রতি অনাস্থা জন্মিল। বৈদিক ধৰ্ম্মের সহিত আনুষ্ঠানিক পৌত্তলিক হিন্দু-ধৰ্ম্মের কোনও সম্বন্ধ নাই, এই বিশ্বাস হৃদয়ে বদ্ধমূল হইল। মুসলমান-ধৰ্ম্মের একেশ্বরবাদ আলোচনায় তাহার ধৰ্ম্মমত আরও পরিবৰ্ত্তিত হইল। ক্ৰমে বেদান্ত-আলোচনায় বেদান্ত-মৰ্ম্ম অবগত হইয়া তিনি বুঝিলেন যে, বেদান্তে ঈশ্বরের যে স্বরূপ নিৰ্ণীত হইয়াছে, তাহাই হিন্দুধম্মের সার। সেই অভ্রান্ত মতপ্রাচীন নিৰ্ম্মল হিন্দুধৰ্ম্ম ক্ৰমে পৌরাণিক দেবদেবীর কল্পনায় সমাচ্ছন্ন হইয়া পড়িয়াছে। বেদান্তনির্ণীত একেশ্বববাদ প্ৰতিপন্ন করিবার জন্য তাহার আগ্রহ প্ৰবল হইল। তিনি প্ৰচলিত হিন্দু-ধৰ্ম্মের বিরুদ্ধে প্ৰমাণ-প্রয়োগ পূর্বক “হিন্দুদিগের পৌত্তলিক ধৰ্ম্মপ্রণালী” সম্বন্ধে একখানি গ্ৰন্থ প্ৰণয়ন করিলেন। রামমোহনের পিতা পৌত্তলিক ধৰ্ম্মে ভক্তিমান ছিলেন। তঁহার সহিত মতান্তর হইল, তিনি কৃপিত হইয়া, স্নেহ-মমতা বিসর্জন দিয়া, রামমোহনকে গৃহ-বহিষ্কৃত করিয়া দিলেন। পিতৃপরিত্যক্ত হইয়াও তিনি বিন্দুমাত্র নিরুৎসাহ না হইয়া চারি বৎসরকাল ভারতের নানা স্থানে পরিভ্রমণ করেন। এই সময় তিনি তৎকালীন ব্রিটিশ শাসনের প্রতি বিরক্ত হইয়া, এবং বৌদ্ধধৰ্ম্মের নিগুঢ় মৰ্ম্ম অবগত হইবার জন্য দুরারোহ হিমালয় অতিক্রম করিয়া, তিব্বতে গমন করেন। তিব্বত সে সময় কুসংস্কারে ও উপধৰ্ম্মে সমাকুল। তিনি কুসংস্কারের প্রতিবাদ করেন এবং বৌদ্ধধৰ্ম্ম-মতের প্রতি অবজ্ঞা প্ৰদৰ্শন করায় বিশেষভাবে লাঞ্ছিত ও উৎপীড়িত হন । এমন কি,