পাতা:ভারত-প্রতিভা (প্রথম খণ্ড) - সতীশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়.pdf/৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মহর্ষি দেবেন্দ্ৰনাথ ঠাকুর । যশোহরেব রায় চৌধুরী পরিবারের শ্ৰীমতী সারদা দেবীর সহিত তাহাব পরিণয় হয়। দুই বৎসর তাহার মুক্তি-সাগরগামিনী জীবন-নদী সুখআসক্তির শৈলে প্ৰতিহত হইয়াছিল। অষ্টাদশ বর্ষ বয়সে পিতামহীৰ অন্তিমশষ্যাপার্শ্বে উপবিষ্ট হইয়া, নশ্বর মানবদেহের পরিণাম দেখিয়া, শ্মশানে আনন্দময় অনন্তদেবের বিমল-উজ্জল জ্যোতিঃ দৰ্শন করিয়া তাহান্য মনে অপূৰ্ব্ব বৈরাগ্যেৰ সঞ্চার হইয়াছিল। পিতামহীর মৃত্যুতে বিষাদ ও বৈরাগ্যে তঁহার অনিত্য সৎসারসুখে বিতৃষ্ণ জন্মিল। তিনি কল্পতরু হইয়া নিজের ভোগবিলাসের বৈভবগুলি দান করিয়া ফেলিলেন । তঁহার মনে শ্মশানের ছবি সৰ্ব্বদা প্ৰতিফলিত হইয়া তাহাকে ঈশ্বর-চিন্তায় বিভোর --তন্ময় করিল। তিনি বলিতেন—“জীবন নীরস, পৃথিবী শ্মশানতুল্য, কিছুতেই সুখ নাই—কিছুতেই শান্তি নাই।” তিনি অধিকক্ষণ বাড়ীতে থাকিতে পারিতেন না ; শিবপুর কোম্পা নীব বাগানের প্রাকৃতিক সৌন্দৰ্য্যে মগ্ন হুইয়া অনন্তসৌন্দৰ্য্যময়ের ধানে নিবিষ্ট থাকিতেন। যৌবনের সুখাসক্তির প্রবল বাসনা বৈরাগোরু অনলে ভস্ম কবিয়া ব্ৰহ্মরূপালাভের আশায় তন্ময় হইয়া থাকিতেন। এই সময় তিনি সংস্কৃত সাহিত্যের প্রবল অনুরাগী হইয়া সভাপণ্ডিতের নিকট মুগ্ধবোধ ব্যাকরণ ও মহাভারত পাঠ করেন ; পরে পাশ্চাত্য দৰ্শনশাস্ত্ৰ পাঠ করিয়াছিলেন। সংস্কৃত ও ইংরাজী দর্শন শাস্ত্ৰ পাঠে ও নির্জনপ্রদেশে ধ্যানে প্রত্যহ তঁাহার নূতন নূতন সত্য উপলব্ধি হইতে লাগিল। তাহার ধারণা হইল, এই অসীম ব্ৰহ্মাণ্ড অনন্ত-সৌন্দৰ্য্যময়ের সৃষ্ট; সেই অর্নন্তদেব কোন দেবদেবীর কাল্পনিক মূৰ্ত্তি নহেন। তিনি প্রতিজ্ঞ করিলেন, প্রতিমাপূজার পৌত্তলিকতায় আর যোগদান করিবেন না। তদবধি তিনি