পাতা:ভারত-প্রতিভা (প্রথম খণ্ড) - সতীশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়.pdf/৪২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আবদুল লতিফ। ১৮২৮ খৃষ্টাব্দে আবদুল লতিফ পূর্ববঙ্গের ফরিদপুরে কোনও বিশিষ্ট ও সম্রান্ত মুসলমান-পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ইহার পূর্বপুরুষগণ তুরস্কের যোগদাদ নামক সুপ্ৰসিদ্ধ নগরের অধিবাসী ছিলেন । ক্ৰমে অদৃষ্টপরীক্ষাব্যপদেশে পূৰ্ব্বপুরুষগণের কেহ সুজলা-সুফলা বঙ্গভূমিতে আগমন করেন ; তার পর কৰ্ম্মসুত্রে আবদ্ধ হইয় ফরিদপুরে বসবাস করিতে থাকেন। ক্রমে এই সন্ত্রান্ত মুসলমান-পরিবার ফরিদপুরে বিশেষ প্রতিষ্ঠালাভ করেন। আবদুল লতিফের পিতা কলিকাতা সদর দেওয়ানী আদালতে ব্যবহারাজীবের কৰ্ম্ম করিতেন । প্রথমতঃ পল্লী-পাঠশালায় পাঠ আরম্ভ করিবার পর আবদুল লতিফ কলিকাতা মাদ্রাসায় ভৰ্ত্তি হন। অধ্যয়নে প্ৰগাঢ় অনুরাগহেতু তিনি মাদ্রাসার শ্রেষ্ঠ ছাত্র বলিয়া প্ৰসিদ্ধি লাভ করিয়াছিলেন। ভূদেব বাবু যে সময় হিন্দু-কলেজের শ্ৰেষ্ঠ ছাত্র, সেই সময় আবদুল লতিফ ও মাদ্রাসার প্ৰসিদ্ধ ছাত্র ছিলেন। ভূদেব ও মধুসূদনের সহিত আবদুল লতিফের প্রগাঢ় বন্ধুত্ব জন্মিয়াছিল। এক দিন এই তিনটি মেধাবী ছাত্ৰ, মিলিত হুইয়া, উত্তর কালে কে কি হইতে চাহেন, তাহার আলোচনা করিয়াছিলেন। ভূদেব বাবু বলিয়াছিলেন যে, তিনি যেন দেশের কাজে অণুমাত্ৰও লাগিতে পারেন । মাইকেল মধুসূদন বলিয়াছিলেন, “আমি যেন বড় কবি হইতে পারি।” আর আব্দুল লতিফ “উচ্চ রাজকৰ্ম্মচারী” হইবার ইচ্ছাপ্রকাশ করিয়াছিলেন । এই তিনটি তরুণ ছাত্রের প্রথম-যৌবনের স্বপ্ন পূর্ণমাত্রায় সফল ও সার্থক হইয়াছিল, তাহা কে না বলিবে ?