পাতা:ভারত পথিক - সুভাষ চন্দ্র বসু.pdf/১০৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ভয় পেলেন ধর্মঘটের পাণ্ডা হিসেবে আমাকে হয়তো অনেক লাঞ্ছনা সহ্য করতে হবে। আড়ালে ডেকে নিয়ে আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন, ধর্মঘটের ফল কী হতে পারে আমি ভেবে দেখেছি কি না। জবারে আমি যখন বললাম, ভেবে দেখেছি, তিনি আর কথা বাড়ালেন না। ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিন পূর্ণ হলে কর্তৃপক্ষ মিঃ ওটেনের উপর চাপ দিলেন। মিঃ ওটেন তখন ছাত্র প্রতিনিধিদের ডেকে তাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে ব্যাপারটা ভালোভাবেই মিটমাট করে ফেললেন। দুপক্ষেরই সম্মান বজায় রইল। পরের দিন ক্লাস বসল। যা হবার হয়ে গেছে—এই মনোভাব নিয়ে ছেলেরা যে যার ক্লাস করতে লাগল। সকলেই আশা করেছিল ব্যাপারটা যখন মিটমাটই হয়ে গেছে তখন ধর্মঘটের সময়ে যেসব শাস্তিমূলক ব্যবস্থা অবলম্বন করা হয়েছিল এবার সেগুলি রদ করা হবে। কিন্তু তাদের ভুল ভাঙতে দেরি হল না। অধ্যক্ষমহাশয় জরিমানা মাপ করতে কোনোমতেই রাজী হলেন না। তবে, গরিব বলে কেউ ওজর দেখালে, তিনি তাকে মাপ করতে রাজী ছিলেন। ছাত্র, অধ্যাপক কারুর অনুরোধেই তিনি কর্ণপাত করলেন না। ছেলেদের মেজাজ গেল বিগড়ে, কিন্তু তখন আর কিছু করবার ছিল না।

মাসখানেক পরে আবার ওইরকম একটি ব্যাপার ঘটল। খবর পাওয়া গেল—মিঃ ওটেন আবার একটি ছেলের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছেন, এবারকার ছেলেটি প্রথম বার্ষিকের ছাত্র। ছাত্ররা চট করে বুঝে উঠতে পারল না, এ অবস্থায় কী করা দরকার। আইনসম্মতভাবে ধর্মঘট ইত্যাদি করলে কর্তৃপক্ষ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা অবলম্বন করবেন, আর অধ্যক্ষের কাছে নালিশ করলে কোনো ফলই হবে না। অগত্যা কয়েকজন ছেলে স্থির করল তারা নিজেরাই এর ব্যবস্থা করবে। ফলে

৯৮