পাতা:ভারত ভ্রমণ - তারিনীকান্ত লাহিড়ী চৌধুরী .pdf/৬২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভারত-ভ্ৰমণ । , ভুবনেশ্বরের সমুদয় ভগ্ন ও অভগ্ন মন্দিরাদি দর্শন করিতে হইলে সময় সাপেক্ষ । যাহারা কেবল তীর্থের অভিপ্ৰায়ে যাইবেন তাহদের পক্ষে তাহা সম্পূর্ণ অসম্ভব ; কারণ মন্দির সমূহ শ্রেণীবদ্ধ ভাবে অবস্থিত নহে-- এখানে একটী-ওখানে একটা, একটার নিকট হইতে আরেকটা হয়ত প্ৰায় অৰ্দ্ধ ক্রোশ দূরে অবস্থিত । কাজেই উহা সময় এবং ধৈৰ্য্যের প্রয়োজন । রাজা রাজেন্দ্রলাল মিত্রের মতে উদয়গিরির খোদিত লিপিসমূহের মধ্যে যে ঐশ্বৰ্য্যশালিনী কলিঙ্গনগরী ও প্রবল প্ৰতাপশালী কলিঙ্গ রাজগাপের কথা লিখিত আছে।--তাহা এই ভুবনেশ্বর বলিয়াই তিনি সিদ্ধান্ত করিয়াছেন।--- ইহা কতদূর সােতা তাহ প্রত্নতত্ত্ববিদগণই বলিতে পারেন। . আমরা এখানে ভুবনেশ্বর তীর্থের যে সকল দেব-মন্দিরাদি দর্শন করিয়াছিলাম, তাহদের বিবরণ বিবৃত করিলাম। বিন্দুসরোবরের পূর্বদিকে অনন্ত বাসুদেবের মন্দির ; এই দেবতার পূজাও অনুমতি অনন্ত বাসুদেবের না লইয়া কোন যাত্রারই ভুবনেশ্বর দর্শন করিবার অধিকার মন্দির। হয় না। এই মন্দিরের গঠন ও শিল্পনৈপুণ্য দর্শন করিলে বিস্মিত হইতে হয় । প্ৰধান মন্দিরের কারুকামা এতই সুন্দর যে দেখিয়া আর চক্ষু ফিরে না, মন্দির মধ্যে বাসুদেব ও বলরামের কৃষ্ণ প্রস্তরনিৰ্ম্মিত সুন্দর সুগঠিত মূৰ্ত্তি ; উভয় ভ্ৰাতার মধ্যস্থলে সুভদ্রাদেবী বিরাজমান। এই দেব মন্দির ও উৎকল প্রথায় নিৰ্ম্মিত, চতুদিক প্রাচীর বেষ্টিত । মূলমন্দিরের বহির্ভাগে লক্ষীর মন্দির, লক্ষীর মন্দির ভাঙিয়া যাওয়ায় লক্ষমীদেবী এখন বাসুদেবের নিকটেই বিরাজ করিতেছেন । নাট মন্দিরের স্তম্ভোপরি গরুড় মূৰ্ত্তি বিরাজমান । এই মন্দিরস্থ খোদিত লিপি পাঠে জানিতে পারা যায় যে হরিবল্মা নামক জনৈক নরপতির মন্ত্রী ভট্ট ভবদেব কর্তৃক এই মন্দির নিৰ্ম্মিত হইয়াছে । খোদিত লিপির লেখক বাচস্পতি মিশ্র একাদশ শতাব্দীর লোক ছিলেন বলিয়া পুরাতত্ত্ববিদগণ অনুমান করেন । ভুবনেশ্বর দেবের মন্দির শ্ৰীক্ষেত্ৰধামের মন্দির অপেক্ষা কিছু ছোট লিঙ্গরাজ বা হইলে ও পরিধিতে উহা অনেক বিস্তৃত । এই সুবৃহৎ দেবভুবনেশ্বরের মন্দির। মন্দির সরোবর হইতে প্ৰায় ৩০০ শত গজ দূরে উচ্চ প্রাচীর দ্বারা বেষ্টিত। এই মন্দিরটিও পুরীর শ্ৰীমন্দিরের ন্যায় ভোগ