পাতা:ভারত ভ্রমণ - তারিনীকান্ত লাহিড়ী চৌধুরী .pdf/৭৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ত্ৰিপতি । আছে যে “পাণ্ডবগণ বনবাস কালেও এক বৎসর কাল এই স্থানে বাস করিয়াছিলেন, অদ্যাবধি তাহা “পাণ্ডব তীর্থ” নামে সর্বজন পরিচিত। কলির ৪১১৮ অব্দে রামানুজ জন্মগ্রহণ করেন, সুতরাং ৯০০ নয় শত বৎসর পূর্বেও ইহা মহা তীৰ্থ বলিয়া প্ৰসিদ্ধি লাভ করিয়াছিল। পৰ্বতস্থিত ঝরণা ও তাহার নিকটস্থ একটি জলাশয়। পুণ্য তীৰ্থ বলিয়া বিবেচিত হয়। তন্মধ্যে (১) স্বামীতীর্থ (২) বিরদী গঙ্গা (৩) পাপবিনাশিনী (৪) পাণ্ডব তীর্থ (৫) তুম্বীর কোণ (৬) কুমারবারিকা (৭) গোগৰ্ভ প্ৰধান। এস্থানে বৎসরব্যাপীই যাত্রী সমাগম হয়। ভারতের সুদূর প্রান্তবৰ্ত্তী ধৰ্ম্মপ্ৰাণ ব্যক্তিরা ধৰ্ম্মোদেশে এ স্থানে আগমন করিয়া থাকেন। প্ৰতি ভাদ্র মাসে ব্রহ্মৌৎসবম নামক এক মেলা হইয়া থাকে। সে সময়েও যাত্রীর সংখ্যা অত্যন্ত বৃদ্ধি পায়। যখন বসন্ত-রাণী প্ৰকৃতি-সুন্দরীকে মনোমোহন ফুল্ল কুসুম মালা পরাইয়া ও শ্যামল বিটপী রাজিকে হরিৎ বসনে সাজাইয়া মধুর কণ্ঠে সুমধুর সঙ্গীত রবে জগৎ আমোদিত করিয়া তোলেন, তখন সেই শোভা সম্পদের অপূর্ব পুলকে পুলকিতান্তঃকরণে ত্রিপতি জেলাধিবাসিগণ যে উৎসব করেন, তাহার নাম গঙ্গা-যাত্রা, গঙ্গা-যাত্ৰা নাম শুনিয়া পাঠকগণ শিহরিয়া উঠিবেন না ; উভয় গঙ্গা-যাত্রায় বহু প্ৰভেদ বিদ্যমান । এই উৎসব উপলক্ষে বহু মহিষ, ভেড়া, ছাগল, এমন কি কুকুট পৰ্য্যন্ত বলি দেওয়া হয়। নিম্ন ত্ৰিপতিতে প্ৰায় দ্বাদশটি মন্দির আছে, তন্মধ্যে অধিকাশিংই তেমন দর্শনীয় নহে। এ স্থানের গোবিন্দরাজ স্বামীর এবং রামস্বামীর মন্দিরই বিশেষ বিখ্যাত। এতদ্ব্যতীত এস্থানে ৩১টি তীর্থম অর্থাৎ ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জলাশয় আছে। তন্মধ্যে স্বামী পুস্করিণীই প্ৰধান। ইহা দৈর্ঘ্যে ও প্রস্থে ১০০ × ৫০ গজ। চারিদিকে গ্রেনাইট প্রস্তরদ্বিারা সোপান বাঁধান। জল সবুজ বর্ণ এবং দুর্গন্ধজনক। যাত্ৰিগণ ইহাতে অবগাহন করিয়া থাকে। এই তীর্থ দেবালয়ের সন্নিকটে অবস্থিত । নগরের এক মাইল উত্তরে তিরুমালয় পৰ্বত-গাত্রে কপিলতীৰ্থ নামক একটা জল-প্রপাত আছে। এদেশবাসিগণ বলিয়া থাকেন যে কপিলমুনি কিছুদিন এইস্থানে তপস্যা করিয়াছিলেন বলিয়াই এস্থানের নিম্ন ত্ৰিপতি । কপিলান্তীর্থ। a8)