পাতা:ভারত ভ্রমণ - তারিনীকান্ত লাহিড়ী চৌধুরী .pdf/৭৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভারত-ভ্ৰমণ । সন্ধার ধূসর ছায়ায় যখন চারিদিক আবৃত হইয়া আসিতেছিল, যখন দুই একটা করিয়া তারা একে একে প্ৰফুল্ল-পদ্ম-কোরকবৎ সুনীলগগন-সাগরে ভাসিয়া উঠিতেছিল, তখন আমরা উপর ত্ৰিপতি হইতে নিম্ন ত্ৰিপতিতে অবরোহণ করিলাম ; দেখিতে দেখিতে সন্ধ্যার অন্ধকারে শেষাচলমের শৃঙ্গরাজি আমাদের নয়ন-পথ হইতে অদৃশ্য হইয়া গেল। উচ্চ ত্রিপতির ব্যঙ্কটেশ্বর স্বামীর মন্দির সন্নিকটে গােগৰ্ভ তীর্থের কাছে ক্ষেত্র-বলি-গুণ্ডি নামে এক প্ৰস্তরময় স্তম্ভ আছে, এ স্তম্ভের নিকট কেহ মিথ্যা কথা কহিতে সাহসী হয় না । যে সকল বিষয়ের সত্যাবধারণ করিতে বিচারক অপারগ হন, এস্থানে তাহা নিবিবাদে নিষ্পত্তি হইয়া যায়। বাদী ও প্রতিবাদী গো-গর্ভ তীর্থে স্নান করিয়া আৰ্দাবস্ত্ৰে এই স্তম্ভের নিকট আসিয়া যাহা বলে তাহাই সত্য বলিয়া গৃহীত হইয়া থাকে। এইরূপ শপথ করিতে হইলে বাদী ও প্রতিবাদীকে সাত টাকা জমা দিতে হয়। তৎপরে খিচুরি, পুরি, অন্ন ও দধিমণ্ডীর ভোগ হইয়া থাকে। এই ভোগপ্ৰসাদ বৈরাগিগণ পায় । নিন্ম ত্রিপতি নগর কখন কখন স্বামিজী গোবিন্দপত্তন নামে অভিহিত হইয়া থাকে। এই সহর হইতে চারিদিকের দৃশ্য অতি মনােহর। নগরের তিন মাইল দক্ষিণদিকে সুবর্ণমুখী নদী প্রবাহিতা | পূর্ব ও পশ্চিমদিকে বহুদূর ব্যাপিয়া অগণন ছোট ছোট গিরিশ্ৰেণী দেখিতে পাওয়া যায়। এখানে ডেপুটি তহশীলদার ও ডিষ্ট্রক্ট মুন্সেফের আফিস আছে। সর্বশুদ্ধ উভয় ত্ৰিপতিতে ৩১টি দেবালয় বিদ্যমান। আমরা নিম্ন ত্রিপতি হইতে সেই রাত্ৰিতেই ঝটুকরোহণে রেণীগুণ্টা (Remigunta) জংশনে উপনীত . হইয়া এক হোটেলে আহারাদি সম্পন্ন করিলাম। এ দেশের !፥” হোটেলে ও আমাদের দেশের হোটেলে বহু প্ৰভেদ। দেশভেদে রুচিভেদে খাদ্যাদিরও যে পার্থক্য হইবে ইহা বলাই বাহুল্য। এখানকার খাদ্য দ্রব্যাদি (১) সাক (২) সম্বর ও (৩) সোরা এই তিন ভাগে বিভক্ত । সাকি আমাদেরি দেশের ন্যায় প্ৰস্তুত হইয়া থাকে, মোটের উপর যাহা কিছু ভাজিয়া রসুই করা হয়, তাহাই সাক শ্রেণীর অন্তৰ্গত। (২) সম্বারা অর্থাৎ যে সমস্ত আহাৰ্য্য দ্রব্য প্ৰস্তুত করিতে হইলে “সম্বার’ বলিগুণ্ডি । রেণীগুণ্টা । ৫৪৬