পাতা:ভারত ভ্রমণ - তারিনীকান্ত লাহিড়ী চৌধুরী .pdf/৮৮৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ਝa আমরা কোচীন দর্শনান্তে পুনরায় ইরোডে ফিরিয়া আসিয়া সেখান হইতে প্ৰাচীন বিজয়নগর বা হাস্পীর ধ্বংসাবশেষ দর্শন করিবার উদ্দেশে রওয়ানা হইলাম। পথে আরকোনাম, রেণীগুণ্টা, গণ্টকাল ইত্যাদি স্থান দর্শন করিয়াছিলাম। এ সমুদয় স্থানে দর্শন যোগ্য কিছু নাই বলিয়া তাহাদের কোনও বিবরণ প্রদত্ত হইল না। রাত্ৰি বারো ঘটিকার সময় আমরা হসপেটি পহুছিলাম। হস্পেট হইতে হাম্পি বা প্ৰাচীন বিদ্যানগরের (বিজয়নগর) ধ্বংসাবশেষ নয় মাইল দূরে অবস্থিত। আমরা রাত্ৰিতেই গো-যানারোহণে হাম্পিার দিকে রওয়ানা হইলাম। রজনী গাঢ় অন্ধকারময়ী, পঞ্চমীর ক্ষীণচাঁদ বহুক্ষণ হয় অস্ত গিয়াছে। রাস্তার উভয় পার্শ্বে নিবিড় বন ও ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র গিরিশ্ৰেণী উন্নত মস্তকে দণ্ডায়মান রহিয়াছে। আমরা তিন চারি জন আরোহী নানাবিধ গল্প করিতে করিতে যাইতেছি, গো-যানের সেই ঢেকস, ঢেকস শব্দ, শকটচালকের তাহদের উপর প্রীতি সম্ভাষণ ও মৃদু-পবন-কম্পিত বৃক্ষ পত্রের সরু সরু শব্দ ভিন্ন সেই নীরব নিশীথে আর কিছুই শ্রত হইতেছিল না। মাঝে মাঝে আমাদের মনে দস্যভীতিও জাগিতেছিল, শকট-চালকও পূর্বেই সে কথা আমাদিগকে জ্ঞাত করিয়াছিল, কিন্তু প্রাচীন কীৰ্ত্তিশালিনী নগরীর ংসাবশেষ দর্শন করিবার জন্য আমাদের প্রাণে এমনি আশা ও উৎসাহের সঞ্চার হইয়াছিল যে আমরা পূর্বে সে সকল বিভীষিকাময়ী কল্পনা মনের মধ্যে স্থান দিবার অবসর পাই নাই। আর প্ৰত্যুষে পহুছিতে পারিলে দেখিবার পক্ষেও সুবিধা হইবে বলিয়া ষ্টেসনে অবস্থান পূর্বক কালক্ষেপ না করিয়া অগ্রসর হইয়াছিলাম, কিন্তু এখন পথি পা স্থি বিজন অরণ্যানীর নীরব গম্ভীর ভীতিপ্ৰদ ভাব দর্শনে হৃদয় আতঙ্কিত হইতেছিল। বিপদে পড়িলেই লোকে ভগবানের নাম স্মরণ করিয়া থাকে, আমরাও এখন সেই জগৎপাতা জগদীশ্বরই আমাদের রক্ষা করিবেন ভাবিয়া নিশ্চিন্ত হইলাম, এবং একে অন্যের গায়ের উপর ঢলিয়া পড়িয়া কোনও রূপে নিদ্রা-সুন্দরীকে পথের বর্ণনা । O , . . . . ,。制“