পাতা:ভাষা বিজ্ঞান নামক বাঙ্গালা ভাষার ব্যাকরণ.pdf/১১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

>е о বাঙ্গালা ব্যাকরণ । ( ৫ ) পদের আদি স্বরের বিকল্পে বৃদ্ধি হয় । যথা—বিবস্বং+ট=বৈবস্বত, দ্রোণ+ট=দ্রোণি, পৃধ+ ট=পার্থ, জমদগ্নি + ট্য=জামদগ্ন্য, তপতী+ট্য=জ্ঞাপত্য, উরুলোমন+টি=ঔরুলোমি, কত্যি+টায়ন= কাত্যায়ন, যন্থ+ট=যাদব, সবিতৃ+ট=সাবিত্র ( স্ত্রীলিঙ্গে ) সাবিত্রী, রক্ষঃ+ট= রাক্ষস, মন্ত্রঃ+ট=মহিষ, গাধিঃ+টায়ন=গাধিরায়ণ, বিধায়ং+টি=বৈধামি, ঃ+ট্য=মনুষ্য ইত্যাদি। নিপাতনে—ইক্ষুকু+ট=ঐক্ষাক। আধুনিক হিন্দুদিগের যে প্রকার নাম রাখা হয় তাহ আরবী নাম অনুকরণ । ইহাতে দুই তিন বা তদধিক শব্দ একত্র করিয়া একটি নাম রাখা হয়। কোথাও বা নামের কতক অংশ সংস্কৃত মূলক এবং কতক আধুবী মূলক হয় অপর স্থলে সম্পূর্ণ নামই সংস্কৃত মূলক অথচ সৰ্ব্বত্রই আরবীর অনুকরণ। যেমন— আরবী গোলাম শব্দের অর্থ দাস এবং অবদ শব্দেরও অর্থ দাস । আরবী ভাষায় গোঞ্জাম আলি, আবদুল আলি প্রভৃতি নামের অনুকরণে রাম গোলাম, শিব গোলাম, রামদাস, শিবদাস প্রভৃতি নাম হিন্দুদের মধ্যে প্রচলিত হইয়াছে। আরবী ফজদ এবং ওলাদ শব্দে সন্তান বুঝায়। আরবী ফর্জন্দ আলি, ওলাদ হোসেন প্রভৃতি নামের অনুকরণে রামকুমার, কালীকুমার, হরিকিশোর, রঘুনন্দন প্রভৃতি নাম আধুনিক হিন্দু সমাজে দেখা যায়। ঐরূপ থোদা বকুষ, রহিম বক্ষ নামের অনুকরণে, হিন্দুদের মধ্যে রাম বক্ষ, ভবাণী বক্ষ, কালীপ্রসাদ, হরিপ্রসন্ন প্রভৃতি নাম হইয়াছে। যাহার একত্রীকৃত কোন অর্থ নাই এমন একাধিক শব্দ দ্বারা একটি নাম গঠন করিতেও দেখা যায় যেমন রামকালী, গঙ্গাহরি, কালীনারায়ণ ইতাদি । আরবী নিয়ম এই যে লোকের যেমন ভাগ্যবৃদ্ধি হয় তৎ সঙ্গে সঙ্গে তাহার নামও দীর্ঘতর হইতে থাকে। হিন্দুদের তদ্রুপ নামের ক্রমশঃ বৃদ্ধির রীতি নাই বটে কিন্তু ধনী লোকের নিজ সন্তানের নামকরণ কালেই সুদীর্ঘ নাম রাথিয়া থাকেন যেমন ( ১ ) জগদিন্দ্র নারায়ণ, (২) ঈশ্বরী প্রসাদ নারায়ণ সিংহ (৩) ভৈরবেন্দ্র নারায়ণ, গদাধর ইত্যাদি। o এইরূপ নামকরণ মম্বাদি শাস্ত্রকারের স্বত্র বিরুদ্ধ এবং অতিশয় অসুবিধাজনক । ঈদৃশ বৃহৎ নাম ধরিয়া কেহ কাহাকে ডাকিতে পারে না। তজ্জন্ত পুরুষদিগকে তারিণী, ভবানী, অন্নদী, রমণী প্রভৃতি স্ত্রীলিঙ্গ শব্দ দ্বারা আহবান করিতে হয় ।