পাতা:ময়ূখ - রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/১৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
১৩৪
ময়ূখ

 “আমি পারি না পারি তাহাতে তোর কিরে হারামজাদী?”

 “খবরদার মুখ সামাল! বেগম, ও খসম্‌ তুমি ভোগ করিতে পারিবে না, অন্ততঃ আমি জীবিত থাকিতে নয়।”

 “তোকে কুত্তা দিয়া খাওয়াইব।”

 “এখান হইতে ফিরিয়া গেলে তবেত?”

 তাতারী এই বলিয়া কটিদেশ হইতে সুদীর্ঘ কৃপাণ বাহির করিল এবং ক্ষুধিত ব্যাঘ্রের ন্যায় লম্ফ দিয়া গুলরুখ্‌ বেগমকে আক্রমণ করিল। গুলরুখ্‌ অস্ত্রহীনা, তাতারীর আক্রমণ হইতে আত্মরক্ষা করিবার তাহার কোন উপায়ই ছিল না। তাতারী বজ্র মুষ্টিতে তাঁহার কেশরাশি ধারণ করিয়া কৃপাণ উদ্ধে তুলিল। গুলরুখ্‌ যথাসাধ্য চীৎকার করিতে লাগিলেন। আগ্রা দুর্গের প্রাচীর এমন কৌশলে নির্ম্মিত যে গুপ্তপথে বন্দুকের আওয়াজ করিলেও তাহা বহির্দ্দেশ হইতে শুনা যাইত না। কৃপাণ গুলরুখের স্কন্ধ স্পর্শ করিবার পূর্ব্বে কে তাহা তাতারীর হস্ত হইতে ছিনাইয়া লইল, সঙ্গে সঙ্গে তাতার দশ হস্ত দূরে নিক্ষিপ্ত হইল। গুলরুখ্‌ উঠিয়া দাঁড়াইলেন এবং দেখিলেন যে তাতারীর গ্রীবা ধারণ করিয়া একজন কৃষ্ণবর্ণ খর্ব্বাকৃতি মনুষ্য তাহাকে ক্ষিপ্রহস্তে বন্ধন করিতেছে।

 বন্ধন শেষ হইলে সে গুলরুখের নিকটে আসিয়া তাঁহাকে চলিয়া যাইতে ইঙ্গিত করিল। তাঁহাকে উপদেবতা ভাবিয়া গুলরুখ্‌ ভয়ে ও বিস্ময়ে অর্দ্ধমৃত হইয়াছিলেন, তিনি বাক্যব্যয় না করিয়া উর্দ্ধশ্বাসে পলায়ন করিলেন। অর্দ্ধদণ্ড পরে শত শত