পাতা:মস্তকের মূল্য - সরোজনাথ ঘোষ.pdf/১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মস্তকের মূল্য। তোমাদের বাড়ীর দরজা ভাঙ্গিয়া মোগল সৈন্য যথাসৰ্ব্বস্ব লুটিয়া লইল। আমার তেজস্বী মনিব এই পৈশাচিক অত্যাচারে বাধা দিতে গিয়াছিলেন, তাই সম্রাটের সেনা তঁহাকে বাধিয়া লইয়া গিয়াছে।” পাষাণমূৰ্ত্তির মত দাড়াইয়া সমরসিংহ অত্যাচারী সম্রাটের কীৰ্ত্তিকাহিনী শ্রবণ করিল। ক্ষোভে, ক্ৰোধে, দুঃখে অজয়ের মুখমণ্ডল বিবৰ্ণ হইয়া গেল। “এস, দেখিবে চল” বলিয়া বৃদ্ধ সমরসিংহকে ভিতরে লইয়া চলিল। অজয় তাহদের অনুগমন করিল। সমস্ত কক্ষ অন্ধকার । সৰ্ব্বত্র বিশৃঙ্খলা। গৃহের আসবাবপত্র ইতস্ততঃ বিক্ষিপ্ত, ভগ্ন, অৰ্দ্ধভগ্না! যেন একটা প্ৰলয়-ঝটিকার ভীষণ আঘাতে সমগ্র অরণ্যানী বিধ্বস্ত হইয়া গিয়াছে। তাহাদের শয়নকক্ষের প্রাচীরে জননীর একখানি চিত্ৰপট বিলম্বিত ছিল ; ছিন্ন দীর্ণ অবস্থায় তাহা ভূমিতলে লুটাইতেছে! বহুক্ষণ পৰ্য্যন্ত কেহ কোনও কথা কহিল না | শঙ্কর স্বামীর প্রদত্ত গ্ৰন্থৱাশি একস্থলে রক্ষা করিয়া পরিচারক ভিখারী এক পাশ্বে দাড়াইয়া ছিল। সমর নিনিমেষলোচনে পুস্তকধারটি দেখিতে লাগিল। বৰ্ত্তমান দুর্দিনের, নিৰ্ম্মম অত্যাচারের প্ৰতিবিধানের উপায় কি মেঘদূত, কাদম্বরী, বা উত্তররামচরিত্যের শ্লোকরজির অন্তরালে প্রচ্ছন্ন আছে ? গীতা, পূৰ্বমীমাংসা, বা উত্তরমীমাংসায় এ জটিল প্রশ্নের মীমাংসা সম্ভব কি না, সমর কি তাহাই চিন্তা করিতেছিল ?