পাতা:মহাত্মা রাজা রামমোহন রায় (সচিত্র) - নগেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়.pdf/১৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পণ্ডিতগণের সহিত বিচার δο (* লোকপ্ৰসিদ্ধ বিষ্ণু, মহেশ্বর, ইন্দ্ৰ, প্ৰাণ, ইত্যাদি ব্ৰহ্ম নহেন ; কিন্তু ব্ৰহ্ম কেবল চৈতন্যমাত্র হয়েন । ভট্টাচাৰ্য্যের সহিত বিচারে, রামমোহন রায় প্ৰাচীন শাস্ত্ৰ সকল হইতে ভূরি ভুরি শ্লোক উদ্ধৃত করিয়া প্ৰতিপন্ন করিয়াছেন যে, পৰমেশ্বর নিরাকার, চৈতন্যস্বরূপ । কিন্তু কেবল শাস্ত্রীয় শ্লোক উদ্ধৃত করিয়াই তিনি ক্ষান্ত হন নাই । শাস্ত্ৰসম্মত অখণ্ডনীয় যুক্তিদ্বারা তঁহার মত সমৰ্থন করিয়াছেন। অনন্ত পদার্থ কখন মূৰ্ত্তিবিশিষ্ট হইতে পারে না। পরমেশ্বর অনন্ত, সুতরাং তঁহার মূৰ্ত্তি থাকিতে পারে না । তিনি এ বিষয়ে বলিতেছেন -“যখন মূৰ্ত্তিস্বীকার কি ধ্যানে, কি প্রত্যক্ষে করিবে, সে যদি অত্যন্ত বৃহদাকার হয়, তথাপি আকাশের মধ্যগত হইয়া পরিমিত এবং আকাশের ব্যাপ্য অবশ্য হইবেক, কিন্তু ঈশ্বব সৰ্ব্বব্যাপী হয়েন, কোন মতে পরিমিত এবং কাহারও ব্যাপ্য নহেন।” সর্বশক্তিমান পরমেশ্বর, ইচ্ছা করিলে মূৰ্ত্তি ধারণ করিতে পরিবেন না কেন ? অনেকে জিজ্ঞাসা করিয়া থাকেন যে, পরমেশ্বর নিরাকার ও চৈতন্যস্বরূপ হইলেও, তিনি যখন সৰ্ব্বশক্তিমান, তখন ইচ্ছা করিলে মূৰ্ত্তি ধারণ করিতে পরিবেন না কেন ? ইহার উত্তরে রামমোহন রায় বলিয়াছেন যে, পরমেশ্বর জগতের সৃষ্টিস্থিতিপ্ৰলয় বিষয়ে সৰ্ব্বশক্তিমান হইলেও, তাহার। আপনার স্বরূপ নাশ করিবার শক্তি র্তাহার আছে, এমন স্বীকার করা যাইতে পারে না । কেননা, ব্ৰহ্ম যেমন জগৎকে বিনাশ করিতে পারেন, সেইরূপ, তিনি আপনাকে আপনি বিনাশ করিতে পারেন, এরূপ কথা বলিলে, ব্রহ্মের নাশের সম্ভাবনা রহিল। কিন্তু যাহার নাশের সম্ভাবনাও আছে, সে কখন ব্ৰহ্ম নহে। সুতরাং