পাতা:মহাত্মা রাজা রামমোহন রায় (সচিত্র) - নগেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়.pdf/১৯৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পণ্ডিতগণের সহিত বিচার УУ (t এরূপ অনাশ্রমী ব্যক্তিদের ব্রহ্মবিদ্যাতে অধিকার আছে কি না, এই সংশয় উপস্থিত হইলে, আপাততঃ মনে হয় যে, আশ্রমকৰ্ম্মহীন ব্যক্তিদের ব্ৰহ্মাবিদ্যাতে অধিকার নাই। ইত্যাদি। এই পূৰ্বপক্ষে বেদব্যাস সিদ্ধান্ত করিয়াছেন, অনাশ্রমী ব্যক্তিরাও ব্রহ্মবিদ্যাতে অধিকারী। যেহেতু, রৈস্ক, বাচক্লবী প্ৰভৃতি আশ্রমকৰ্ম্মহীন ব্যক্তি সকলেরও ব্ৰহ্মজ্ঞান প্ৰাপ্তি হইয়াছে, ইহা বেদে দেখিতেছি । সম্বর্তে প্ৰভৃতি বৰ্ণাশ্রমকৰ্ম্মহীন ছিলেন ও সর্বদা বিবস্ত্ৰ থাকিতেন, তঁহাদেরও মহাযোগিত্ব ইতিহাসে দেখিতেছি । বেদাধ্যায়নবিহীন শূদ্র ও স্ত্রীলোকাদি যে ব্ৰহ্মজ্ঞানে অধিকারী, বেদ ও স্মৃতিতে ইহার অনেক দৃষ্টান্ত পাওয়া যায়। শূদ্র ও স্ত্রীলোকাদির বেদধ্যয়নে অনধিকার থাকিলেও ইতিহাসে, পুরাণ ও আগামাদিতে তঁহাদের অধিকার আছে। এই সকল শাস্ত্ৰে চতুবর্ণেরই অধিকার আছে। অতএব, ইতিহাস, পুরাণ ও আগম পাঠ করিয়া গৃহস্থ স্ত্রী, শূদ্ৰ, ব্ৰহ্মবিদ্যা লাভ করিতে পারেন। এইরূপে, বাজা রামমোহন রায় প্ৰদৰ্শন করিয়াছেন যে, শাস্ত্রানুসারে, স্ত্রী শূদ্রের জন্য ব্ৰহ্মজ্ঞান ও মুক্তির পথ উন্মুক্ত রহিয়াছে। এইরূপে, রামমোহন রায়ের শাস্ত্রব্যাখ্যানুসারে শূদ্ৰ,আগমেতিহাস্যাদিদ্বারা "ব্রহ্মবিদ্যা প্ৰাপ্ত হইয়া ব্ৰহ্মনিষ্ঠ হইলে, আশ্রমী গৃহস্থ থাকিয়াও ব্রাহ্মণ্য প্ৰাপ্ত হইবেন । রামমোহন রায়ের মতে প্ৰণব, উপনিষদাদি বেদাভ্যাস ও করিতে পারিবেন। ব্ৰহ্মনিষ্ঠব্যক্তি মাত্রেই ব্ৰাহ্মণ । সুতরাং, সহজেই সিদ্ধান্ত হইতেছে যে, শূদ্র, ব্রহ্মনিষ্ঠ হইলে, প্ৰণব, উপনিষদাদি বেদাভ্যাসও করিতে পরিবেন। এইরূপ, রামমোহন রায় বৰ্ণাশ্ৰমধৰ্ম্ম স্বীকার করিয়াও তাহার ভিতর দিয়া শূদ্রের সামাজিক ও পারমার্থিক “উন্নতির পথ উন্মুক্ত করিয়া দিলেন। তঁহাদের পক্ষে আর এক পথ বৰ্ণাশ্ৰমধৰ্ম্মত্যাগ ।