পাতা:মহাত্মা রাজা রামমোহন রায় (সচিত্র) - নগেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়.pdf/২২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৯৯৮ মহাত্ম রাজা রামমোহন রায়ের জীবনচরিত কথা এই যে, মানসমূৰ্ত্তি বা হস্তনিৰ্ম্মিত মূৰ্ত্তি অবলম্বন করিয়া উপাসনা করিলে অবশ্যই সাকার উপাসনা করা হয় । এক অনন্ত ঈশ্বর কি যথেষ্ট নাহে ? পাদ্রিসাহেব বলেন যে, বাইবেলে আছে যে, পিতা ও পুত্র ও হোলিগোষ্টি এই তিনে তুল্যরূপে মনুষ্যদিগকে প্ৰসন্নতা ও স্বচ্ছন্দতা প্ৰদান করেন। তাহাদিগকে পাপ হইতে মুক্ত করেন ও তঁহাদের ধৰ্ম্মপথে প্ৰবৃত্তি দেন। সর্বজ্ঞ, সর্বশক্তিমান, অনন্তস্নেহ, অত্যন্ত দয়ালু ব্যতীত এ সকল কাৰ্য্য কেহ করিতে পারেন না। রামমোহন রায় ইহার উত্তরে ৰলিতেছেন যে, তিনি ইহা অপেক্ষা অধিক স্পষ্ট, অন্য কোনরূপ বহুঈশ্বরবাদ কখনও শুনেন নাই । তিন পৃথক ব্যক্তিকে সর্বজ্ঞ, সর্বশক্তিমান ও অনন্তদয়াবিশিষ্ট বলা হইতেছে। সুতরাং এস্থলে জিজ্ঞাস্য এই যে,এক ব্যক্তির সর্বজ্ঞাত্ব, সর্বশক্তি ও অনন্ত দয়ার দ্বারা কি এই জগতের বিচিত্র রচনা ও তাহার রক্ষা হইতে পারে না ? যদি বলেন, যে, এক সৰ্বশক্তিমান হইতে জগতের সৃষ্টি ও স্থিতি হইতে পারে, তাহা হইলে, জিজ্ঞস্য এই ধে, দ্বিতীয় ও তৃতীয় সর্বজ্ঞ ও সর্বশক্তিমান স্বীকার করার প্রয়োজন কি ? একজন সর্বজ্ঞ, ও সর্বশক্তিমান ঈশ্বর কি যথেষ্ট নহেন ? যদি বলেন যে, একজন সর্বজ্ঞ ও সর্বশক্তিমান ঈশ্বরদ্বারা সৃষ্টিস্থিতি হইতে পারে না, তাহা হইলে, তিন ঈশ্বরেতে কেন বদ্ধ থাকিব ? অনন্ত ব্ৰহ্মাণ্ডের মধ্যে যত ব্ৰহ্মাণ্ড, ততজন সর্বজ্ঞ ও সর্বশক্তিমান ঈশ্বর কেন স্বীকার করিব না ? তাহদের প্রত্যেকের ভাগে, এক এক ব্ৰহ্মাণ্ডকে নির্দিষ্ট করিয়া দেওয়া যাইতে পারে না কেন ? ইয়োরোপীয়ের রাজকাৰ্য্যে ও শিল্পশাস্ত্রে যেরূপ বিচক্ষণতা প্ৰকাশ করেন, তাহা দেখিয়া অন্য দেশীয় লোক প্ৰথমে অনুমান করেন যে,