পাতা:মহাত্মা রাজা রামমোহন রায় (সচিত্র) - নগেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়.pdf/২২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পাদ্রিসাহেবের সহিত বিচার ܠ ܗ তদ্বিষয়ে জিজ্ঞাসা করিতেছেন যে, ঐ বাক্যটির প্রকৃত অর্থ কি ? ঐ বাক্যটিতে বাস্তবিক কি ঈশ্বরের দক্ষিণপার্শ্ব বুঝিতে হইবে, অথবা মনে করিতে হইবে যে, ঐ বাক্যটি রূপক ভাবে লিখিত হইয়াছে ? বাইবেলের প্ৰথম তিন অধ্যায়ে নিম্নলিখিত বাক্য সকল দেখতে পাওয়া যায় ; “ঈশ্বর আপন ক্রিয়া হইতে সপ্তম দিবসে বিশ্রাম করিলেন।” “ঈশ্বর ঈদন উপবনে দিবসের শীতল সময়ে বেড়াইতেছিলেন।” “ঈশ্বর আদমকে কহিলেন যে, তুমি কোথায় রহিয়াছ ?” “বিশ্রাম” এই শব্দেবি দ্বারা মুশা কি ইহাই প্ৰকাশ করিয়াছেন য়ে, ঈশ্বর শ্রমাধিক্যবশতঃ আপনার কাৰ্য্য হইতে নিবৃত্ত হইলেন ? এরূপ হইলে পবমেশ্বরেব অপরিবর্তনীয় স্বরূপে আঘাত পড়ে । “দিবসের শীতল সময়ে ঈশ্বর বেড়াইতেছিলেন” এই বাক্যদ্বারা মুশা কি এই অভিপ্ৰায় প্ৰকাশ করিয়াছেন যে, ঈশ্বর উত্তাপের ভয়ে “দিবসের শীতল সময়ে” মানুষ্যের ন্যায় পাদবিক্ষেপ দ্বারা এক স্থান হইতে অন্য স্থানে গমন কবিতেছিলেন ? “আদম, তুমি কোথায় রহিয়াছ ?” এই প্রশ্নদ্বারা মুশা কি ইহাই প্ৰকাশ কবিতেছেন যে, আদম কোথায় আছেন, তাহ সর্বজ্ঞ পরমেশ্বব জানিতেন না ? এই সকল বাক্যের যদি ঐ রূপ তাৎপৰ্য্যই হয়, তাহা হইলে, বলিতে হইবে যে, মুশার পরমার্থজ্ঞান ও তৎকালীন মূখদের পরমার্থজ্ঞান দুইই প্ৰায় गभiन्म छिल । রামমোহন রায়, তৎপরে বলিতেছেন, যে, আমার বোধ হয় যে, সে কালের অজ্ঞান য়াহুদীদের বোধসুগমের জন্য মুশ পরমেশ্বরকে মানবীয়ভাবে বর্ণন করিয়াছেন । “আমি খ্ৰীষ্টানদের প্রমুখাৎ শুনিয়াছি যে, প্ৰাচীন ধৰ্ম্মোপদেষ্টারা, যাহাদিগ্যে ঐ খৃষ্টান ধৰ্ম্মের পিতা কহিয়া থাকেন, তাহার এবং ইদানীন্তন জ্ঞানবান খৃষ্টানেরা কহেন যে, মুশা অজ্ঞানদের বোধ্যাধিকারের নিমিত্ত এরূপ বৰ্ণনা করিয়াছেন ।”